চাটমোহরে আলোচিত সেই কবরস্থান নির্বাচন স্থগিত, উত্তেজনার মাঝে সমঝোতার উদ্যোগ

বুধবার, ২১ মে, ২০২৫ ১:০৯ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে থাকা পাবনার চাটমোহরের সেই কবরস্থান কমিটির সভাপতি নির্বাচন অবশেষে স্থগিত করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় বুধবার (২১ মে) বিকেলে নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা দেন স্থানীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান ও কবরস্থান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন মাস্টার।
‘জান্নাতুল বাকি’ নামের এই কবরস্থান কমিটি গঠিত হয়েছে চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের বালুদিয়ার, মহরমখালী ও আংশিক জগতলা গ্রামের সমন্বয়ে। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির পরিবর্তে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে ২৪ মে ভোট গ্রহণের কথা থাকলেও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কমিটির প্রধান মতিন মাস্টার জানান, “অবস্থা বিবেচনায় আমরা নির্বাচন স্থগিত করেছি। দু’এক দিনের মধ্যে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তি ও প্রধানদের নিয়ে আলোচনায় বসে সমঝোতার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের চেষ্টা করব।”
এ বিষয়ে চাটমোহর থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম বলেন, “নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে নির্বাচন স্থগিতের কথা শুনেছি। পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সে কারণে তাদের সিদ্ধান্ত যৌক্তিক। তবে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সভাপতি পদের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে একজন, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কুদ্দুস নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “অনেক কিছু শুনতে হয়েছে, হুমকিও এসেছে। আমি আর এই কমিটিতে থাকতে চাই না। যারাই চাই, তারা আলোচনা করে সভাপতি ঠিক করুক।”
অন্যদিকে, মূলগ্রাম ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি শরিফুল ইসলাম এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
প্রসঙ্গত, এলাকায় কবরস্থান কমিটির সভাপতি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বিষয়টি স্থানীয় থানায় গড়ায় এবং গণভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। দুই প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে প্রতীক বরাদ্দ পান—আব্দুল কুদ্দুস ‘ছাতা’ ও শরিফুল ইসলামও ‘ছাতা’ প্রতীকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। নির্বাচনী পোস্টারে ছেয়ে যায় গ্রাম, তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে যেমন ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়, তেমনি এটি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তবে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকায় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে নির্বাচন স্থগিত করার পথেই হাঁটে কমিটি।
১২০ বার পড়া হয়েছে