আবারও বাস ডাকাতি, লুটপাটের সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি

বুধবার, ২১ মে, ২০২৫ ৮:৪১ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে একটি চলন্ত বাসে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (২০ মে) রাত সাড়ে ১১টা থেকে আজ বুধবার (২১ মে) ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এই ঘটনা ঘটে। ডাকাত দলের হামলার শিকার হয় রংপুরগামী 'আল ইমরান পরিবহন'-এর একটি বাস, যেখানে প্রায় ৪৫ জন যাত্রী ছিলেন, তাদের মধ্যে অন্তত ১০ জন নারী।
বাসের চালক, সুপারভাইজার এবং যাত্রীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাসটি গতকাল রাত ৮টার দিকে ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে যাত্রা শুরু করে। পথে সাভারের নরসিংহপুর, বাইপাইল, আশুলিয়া থেকে যাত্রী ওঠে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাসটি টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা অতিক্রম করার পর যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্তের কিছুদূর গিয়ে যাত্রীবেশে থাকা ৮-১০ জন অস্ত্রধারী ডাকাত বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
ডাকাতরা চালক ও যাত্রীদের চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে এবং বাসটি ঘুরিয়ে ঢাকার দিকে নেয়। এরপর তারা সাভারের চন্দ্রা ও আশুলিয়া এলাকা পর্যন্ত বাস নিয়ে বারবার চলাচল করে এবং যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নেয়।
বাসের চালক আবেদ আলী জানান, ডাকাতরা রাতভর বাসটি নিয়ে চার-পাঁচবার টাঙ্গাইল থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত যাতায়াত করে। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে তারা টাঙ্গাইল শহরের বাইপাস সড়কের শিবপুর এলাকায় বাসটি ফেলে রেখে চলে যায়।
এ সময় কয়েকজন নারী যাত্রী শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার যাত্রী জুয়েল মিয়া বলেন, চোখ-মুখ বাঁধা অবস্থায় তিনি নারী যাত্রীদের কান্না ও কাকুতি-মিনতি শুনতে পান। রংপুরের আকাশ মিয়া জানান, প্রত্যেক যাত্রীকে কয়েকবার তল্লাশি করে যা কিছু পাওয়া যায়, তা লুটে নেয় ডাকাত দল।
পরে বাসটি টাঙ্গাইল সদর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানবীর আহমদ জানান, এ ঘটনায় মামলা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে এবং ডাকাতদের শনাক্ত করতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারিতেও এই মহাসড়কে 'ইউনিক রয়েলস' পরিবহনের একটি বাসে একই ধরনের ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। ২০২২ সালের ২ আগস্ট কুষ্টিয়াগামী একটি বাসে একই কায়দায় ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি মহাসড়কে যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
১২৪ বার পড়া হয়েছে