তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত

রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫ ৩:০৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশের ভোগ্যপণ্য ও তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত।
দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর (ডিজিএফটি) গত শনিবার এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত কার্যকরের ঘোষণা দেয়, যা সঙ্গে সঙ্গেই বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, এখন থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ফলমূল, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, কোমল পানীয়, চিপস, কনফেকশনারি, বেকারি পণ্য, তুলা ও সুতার বর্জ্য, পিভিসি পাইপ, প্লাস্টিক ও আসবাবপত্র আমদানি বন্ধ থাকবে। এসব পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ হলেও মাছ, ভোজ্যতেল, এলপিজি ও ভাঙা পাথর আমদানি অব্যাহত থাকবে।
একইসঙ্গে বাংলাদেশ থেকে ভারতে তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রেও নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এখন থেকে শুধুমাত্র কলকাতা ও নভসেবা (জওহরলাল নেহরু) সমুদ্রবন্দর দিয়ে এসব পোশাক রপ্তানি করা যাবে। অন্যান্য স্থল ও নদীবন্দর ব্যবহার করে ভারতে পোশাক পাঠানো যাবে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, বিশেষ করে যেসব প্রতিষ্ঠান উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর সঙ্গে স্থলপথে বাণিজ্য করে থাকে। বর্তমানে আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামসহ মোট ১১টি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য পরিচালিত হয়।
বিশ্লেষকদের মত অনুযায়ী, এটি দুই দেশের মধ্যকার সাম্প্রতিক কূটনৈতিক টানাপোড়েনেরই একটি প্রতিফলন। গত এক মাসে বাংলাদেশ ভারত থেকে সুতা আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে এবং ভারত বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয় দেশে রপ্তানির ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে দেয়।
এ বিষয়ে প্রাণ গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল বলেন, “স্থলবন্দর ব্যবহার করেই প্রাণ গ্রুপ ভারতে পণ্য পাঠিয়ে থাকে। সমুদ্র বা আকাশপথে রপ্তানি অত্যন্ত ব্যয়বহুল, ফলে এই সিদ্ধান্ত আমাদের রপ্তানিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
এছাড়া তৈরি পোশাক খাত নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল। তিনি বলেন, “ভারতের হঠকারী সিদ্ধান্ত দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বর্তমানে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে ভারত অন্যতম বড় বাজার। নিষেধাজ্ঞার ফলে রপ্তানির খরচ ও সময় উভয়ই বাড়বে।”
তিনি আরও জানান, বছরে প্রায় ৫০ কোটি ডলারের পোশাক বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি হয়, যা সাম্প্রতিক সময়ে বাড়ছিল। ভারতের নতুন নিষেধাজ্ঞা সেই প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে।
তবে ভারত হয়ে ভুটান ও নেপালে পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে কোনো বাধা আরোপ করা হয়নি বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে।
১২৪ বার পড়া হয়েছে