সর্বশেষ

জাতীয়

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে পায়েলের স্মরণীয় সাক্ষাৎ: সত্যি হলো ভবিষ্যৎবাণী

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫ ১:২৭ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
গুলশানের একটি কপি হাউস।এলিশা ইসলাম পায়েল বলছিলেন কিভাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে তার সাক্ষাৎ হল। বছর চারেক আগে, ২০১৯ সালের ১১ আগস্ট, এই তরুণী স্বপ্নের মানুষটির সাথে দেখা করার কাঙ্খিত মুহূর্তের স্মৃতি আজও তার হৃদয়ে অমলিন হয়ে আছে।

সেই দিনটি ছিল এক অনন্য দিন, যখন তার চোখে ছিল স্বপ্নের বাস্তবতা, আর মুখে মিষ্টি হাসি।

পায়েল গ্রীন ইউনিভার্সিটি থেকে অনার্স শেষ করেছেন। তার চেহারা যেমন সুন্দর, তেমনি তার কথাবার্তায় ভদ্রতা, মার্জিততা, সামাজিকতা এবং বিনয় চোখে পড়ার মতো। এক পলকের জন্য দেখলে যে কেউ তার প্রেমে পড়ে যাবে। তার বুদ্ধিমত্তা ও ব্যক্তিত্বের কারণে সবাই তাকে পছন্দ করে।

ছোটবেলা থেকেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি তার গভীর আগ্রহ ছিল। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন বিশ্বনেতা। ২০০৬ সালে তিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে এই সম্মান অর্জন করেন, যা বাংলাদেশের জন্য গর্বের বিষয়। ১৯৭৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি ১৪৫টিরও বেশি পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন এবং বিশ্বব্যাপী ৪৮টি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী প্রদান করেছে। এই বিচক্ষণ ও পারদর্শী ব্যক্তিত্বের যোগ্যতা ও কৃতিত্বের কারণে বাংলাদেশে তার মতো একজন অমলিন ব্যক্তিত্বের অভাব বলে মনে করেন অনেকেই।

সেই দিনটি স্মরণ করে পায়েল বললেন, “আমি কখনো বিশ্বাস করতে পারিনি যে আমি এত বড় মাপের একজন জ্ঞানের মানুষকে দেখার সুযোগ পাব। কিভাবে একদিন আমার দেখা হবে তা কল্পনাও করিনি। কিন্তু মহান রাব্বুল আলামিন আমাকে সেই সৌভাগ্য দিয়েছেন। ১১ আগস্ট ২০১৯, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে তিনি যখন আমার সাথে দেখা করেন, আমি নিজেকে ধন্য মনে করেছি। ড. ইউনূসের হাসি এতই আন্তরিক ও সুন্দর, যে সেই হাসি আজও আমার মনে দোলা দেয়।”

সাক্ষাৎকালে, পায়েল তার স্বপ্নের কথা প্রকাশ করেন, “আমি ভাবতাম, এত বড় ব্যক্তির সাথে আমার কখনো দেখা হবে না। কিন্তু সেই দিন আমি সত্যিই সৌভাগ্যবান হয়েছি। ড. ইউনূসের সাথে ছবি তোলার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু লজ্জার কারণে পারিনি। তখন তার স্ত্রী আফরোজী ইউনূস আমাকে উৎসাহিত করেন, এবং আমি তার সাথে ছবি তুলতে পারি।” আলাপচারিতা এবং ছবি তোলার এক পর্যায়ে অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মাদ ইউনূসকে উদ্বেশ্য করে পায়েল বলেন ’’আংকেল আপনিই হবেন বাংলাদেশের রাষ্ট্র প্রধান। এ কথা শুনে ড. ইউনূস হেসে ফেলেন। পাশে বসে থাকা ড. ইউনূসের স্ত্রীও হেসে উঠে পায়েলকে অনেক উৎসাহিৎ এবং অনুপ্রণিত মূলক কথা বলেন।

সেই দিনটির স্মৃতিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে পায়েল বলেন, “তখন আমি অনুভব করেছিলাম, আমাদের মতো সাধারণ মানুষও যদি তার মতো ব্যক্তিত্বদের সম্মান ও ভালোবাসা জানায়, তাহলে দেশ আরও উন্নত হবে। আমি মনে করি, আমাদের দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নামে একটি করে ইউনূস কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা উচিত, যেন তার মতো ব্যক্তিত্বের আদর্শে আমরা সবাই অনুপ্রাণিত হতে পারি।”

পায়েল তার আবেগের কথা বলার সময় বলেন, “ড. ইউনূস বাহির থেকে অনুদানের টাকা নিয়ে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যেখানে তিনি নিজে মাত্র ৩০০ ডলারে চাকরি করতেন। তিনি এই ব্যাংককে এমনভাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন, যেখানে কেউ মালিকানা রাখেন না; সবাই তার মালিক, জনগণই মূল মালিক। তিনি একাধারে একজন মহান ব্যক্তি ও সমাজসেবক।”

সাক্ষাৎকালে, পায়েল তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, “আমার জীবনে আর কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। যদি আবার তার সাথে দেখা হয়, তাহলে আমি নতুন জীবন পেতাম। আমার শেষ ইচ্ছে, একবার আবার তার সাথে দেখা করা। মহান রাব্বুল আলামিন যেন বাস্তবে রূপ দেন।”

সাক্ষাৎ শেষে, এক ফেসবুক পোস্টে পায়েল বলেন, “আমি ড. ইউনূসের সাথে প্রথম দেখা হওয়ার অনুভূতি এখনও আমার মনে দোলা দেয়। আমি চাই, তার মতো ব্যক্তিত্বের জন্য আমাদের দেশ আরও এগিয়ে যাবে। তিনি বাংলাদেশের জন্য এক অনুপ্রেরণা, যিনি দুর্নীতিমুক্ত, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবেন এটাই আমার প্রত্যাশা।”

অবাক করা বিষয় হলো, একটি মন্তব্যে কেউ বলেন, “ড. ইউনূস তো নাস্তিক,” জবাবে পায়েল তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, “নো নো, তিনি আস্তিক। তিনি একজন খাঁটি মুসলমান, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন, পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন। তাঁর নামটি একজন নবীর নামে—ইউনূস, যা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র ও মহৎ।”

পায়েল জানান, তিনি ড. ইউনূসের সাথে প্রথম দেখা হওয়ার পর থেকে তার মনে গভীর প্রশংসা ও শ্রদ্ধাবোধ জাগে। তিনি মনে করেন, দেশের উন্নয়নের জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে, দুর্নীতি থেকে দূরে থাকতে হবে।

সর্বশেষ, তিনি সকলকে আহ্বান জানান, “প্রকৃত দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে, দেশের জন্য সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করি। আসুন, আমরা সবাই একসাথে অগ্রসর হই, যেন আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ সত্যি হয়।”

এই স্মরণীয় সাক্ষাৎ ও অনুভূতি আজও তার মনে অমলিন। তিনি আশা করেন, মহান ব্যক্তিদের মতো ড. ইউনূসের আদর্শে আমাদের দেশ আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে। তার এই স্বপ্নের বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

১৩০ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন