কর্মস্থলে অনুপস্থিতি ও অসদাচরণে অভিযুক্ত শিবানী রায়, ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন

শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫ ৮:১৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার মানিকনগর কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিএইচসিপি (কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার) শিবানী রায়ের বিরুদ্ধে কর্মস্থলে অনুপস্থিতি, দায়িত্বে অবহেলা ও অসদাচরণের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলেও এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২৬ এপ্রিল শিবানী রায়কে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয় এবং তিন কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়। পরদিন, ২৭ এপ্রিল তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে বেতন-ভাতা না পাওয়া এবং অন্যান্য কিছু কারণ দেখিয়ে জবাব প্রদান করেন।
তবে অফিসিয়াল তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৪ এপ্রিল স্বাস্থ্য পরিদর্শক ক্লিনিক পরিদর্শনে গিয়ে তাকে অনুপস্থিত পান। যথেষ্ট ওষুধ থাকার পরও সেগুলো বিতরণ না করা, নিয়মিত ক্লিনিকে না থাকা এবং সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও সেখানে অন্তর্ভুক্ত ছিল। সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ, অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও তিনি নিজেকে উপস্থিত দেখানোর চেষ্টা করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের একাধিক সূত্র জানায়, শিবানী রায় এর আগেও একাধিকবার এমন দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু প্রভাবশালী আত্মীয়স্বজনের সহায়তায় তিনি শাস্তির হাত থেকে রক্ষা পেয়ে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, “তাকে শোকজ করা হয়েছে এবং সতর্ক করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।”
তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ ধরনের ঘটনায় ব্যবস্থা না নেওয়া সরকারি দপ্তরে প্রভাব খাটানোর সংস্কৃতিরই প্রমাণ। এক স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “দায়িত্বে অবহেলা করেও কেউ যদি স্বপদে বহাল থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?”
উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট তদন্ত প্রতিবেদনে শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য সরকারী চাকরি বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বদলি ও বেতন-ভাতা বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি, যা স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
১৫৬ বার পড়া হয়েছে