সর্বশেষ

অর্থনীতি

দরপতনের করাল গ্রাসে দেশের শেয়ারবাজার, পাঁচ বছরের সর্বনিম্ন সূচক

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

বৃহস্পতিবার , ১৫ মে, ২০২৫ ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
দেশের শেয়ারবাজারে চলছে টানা দরপতনের ধারাবাহিকতা। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেও বাজারে বড় ধস নেমেছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)— উভয় বাজারেই অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। এর ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক নেমে এসেছে প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বাজারে ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতার সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় শেয়ারের দাম পড়ছে হু-হু করে। এতে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পরিমাণ বাড়ছে দিনকে দিন।

ডিএসইতে টানা তিন দিনের পতন
বৃহস্পতিবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪,৭৮১ পয়েন্টে। এটি ২০২০ সালের ২৪ আগস্টের পর সর্বনিম্ন অবস্থান। টানা তিন কার্যদিবসে ডিএসইএক্স সূচক কমেছে মোট ১৪০ পয়েন্ট।

এছাড়া ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১,০৩৮ পয়েন্টে, এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১,৭৭০ পয়েন্টে।

কোম্পানির পারফরম্যান্স: হতাশাজনক চিত্র
ডিএসইতে এদিন লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে মাত্র ৪২টির শেয়ারদাম বেড়েছে, বিপরীতে ৩১৭টির দাম কমেছে এবং ৩৬টির কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিশেষভাবে, ১০ শতাংশ বা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া ‘ভালো কোম্পানি’গুলোর মধ্যে মাত্র ১৯টির দাম বেড়েছে, বিপরীতে ১৮২টির দাম পড়েছে।

‘মাঝারি মানের’ কোম্পানিগুলোর (১০%-এর কম লভ্যাংশদাতা) মধ্যে ১১টির দাম বেড়েছে, ৬৭টির কমেছে এবং ৪টির অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লাভ না দেওয়ায় ‘জেড’ গ্রুপে থাকা ১২টি কোম্পানির শেয়ারদাম বেড়েছে, কিন্তু ৬৮টির দাম কমেছে।

মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও ধসের রেশ পড়েছে। ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র ২টির দাম বেড়েছে, বিপরীতে ৩১টির কমেছে।

লেনদেনের চিত্র
বৃহস্পতিবার ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৯৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার, যা আগের কার্যদিবসের তুলনায় সামান্য বেশি (২৯৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা)। তবে এটি এখনও ৩০০ কোটির নিচে রয়ে গেছে, যা বাজারের দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়।

লেনদেনে শীর্ষে ছিল বিচ হ্যাচারি, যার ২১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এরপর রয়েছে এনআরবি ব্যাংক (৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা) এবং বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার (৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা)।

শীর্ষ ১০ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আরও ছিল এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ব্র্যাক ব্যাংক, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, উত্তরা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ফাইন ফুডস।

সিএসইতেও একই অবস্থা
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই রকম দরপতন দেখা গেছে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৩৭ পয়েন্ট কমেছে। এদিন ২০৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির দাম বেড়েছে, ১৫১টির কমেছে এবং ১৭টির অপরিবর্তিত রয়েছে। মোট লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ২৯ লাখ টাকা, যা আগের দিনের ১১ কোটি ২২ লাখ টাকার চেয়ে কম।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহ এবং অর্থনীতির সার্বিক চাপে শেয়ারবাজারে এই দীর্ঘমেয়াদি দরপতনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হলে বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরানো ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করা জরুরি।

১১৭ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
অর্থনীতি নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন