রূপপুর প্রকল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি চেষ্টার প্রতিবাদে ঈশ্বরদীতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

বৃহস্পতিবার , ১৫ মে, ২০২৫ ১১:০২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত এনপিবিসিএল-এর কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর ‘দাবি আদায়ের’ নামে প্রকল্প এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রতিবাদে পাবনার ঈশ্বরদীতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকালে ঈশ্বরদী পৌর শহরের ফকিরের বটতলা এলাকায় 'সচেতন নাগরিক সমাজ ঈশ্বরদী'র ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের হাজারো নারী-পুরুষ অংশ নেন। কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন সচেতন নাগরিক সমাজ ও সাহিত্য-সংস্কৃতি পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ওহিদুজ্জামান টিপু।
লিখিত বক্তব্যে ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম ফজলুর রহমান জানান, প্রকল্প এলাকায় আন্দোলনের নামে তৈরি করা বিশৃঙ্খলা জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তুতিপর্বে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, “৯৪ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। চলতি মাসেই সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ হওয়ার কথা, আর ডিসেম্বরে স্টার্টআপের পরিকল্পনা রয়েছে। এই মুহূর্তে এমন পরিস্থিতি প্রকল্প বাস্তবায়নে অশুভ সংকেত দিচ্ছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “বিগত সরকারের আমলে প্রায় ২ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী এনপিবিসিএল-এ নিয়োগ পেলেও বিএনপি বা বিরোধীদলের কর্মীদের সুযোগ দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের চিহ্নিত করার দাবি জানাই।”
বক্তব্যে আরও বলা হয়, চাকরির দাবি থাকতেই পারে, তবে আন্দোলনের নামে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা হচ্ছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকারকে অস্থির পরিস্থিতিতে ফেলতে পরিকল্পিতভাবে এই কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে বলে দাবি করা হয়।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ঈশ্বরদী শিল্প ও বণিক সমিতির সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন জনি বলেন, “রূপপুর প্রকল্পের কারণে ঈশ্বরদীতে অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটেছে। প্রায় ২৫ হাজার স্থানীয় শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এই প্রকল্প বন্ধ হলে স্থানীয় অর্থনীতি চরম হুমকির মুখে পড়বে। বিমানবন্দর চালুর যে পরিকল্পনা রয়েছে, সেটাও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।”
ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সভাপতি আজিজুর রহমান শাহীন বলেন, “রূপপুর একটি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণাধীন প্রকল্প। এখানে আন্দোলন ও সমাবেশ শুধু নিরাপত্তা শর্ত ভঙ্গই নয়, বরং প্রকল্পের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও আইএইএ’র লাইসেন্স প্রাপ্তিও হুমকির মুখে ফেলতে পারে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা আহসান হাবিব, শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি আশিকুর রহমান নান্নু, সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এস আলমগীর, নিউ এরা ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোস্তাক আহমেদ কিরণ, বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম নয়ন, ব্যবসায়ী আবু সাঈদ লিটন, শামসুজ্জোহা পিপপু, নারী নেত্রী সাথী খাতুন প্রমুখ।
মানববন্ধন থেকে প্রকল্প এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
১৩৯ বার পড়া হয়েছে