নাটোরের বড়াইগ্রামে ৮ বছরের শিশু জুঁই হত্যার ঘটনা পুনঃতদন্তের দাবি এলাকাবাসীর

বৃহস্পতিবার , ১৫ মে, ২০২৫ ৮:২৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার গারফা উত্তরপাড়া গ্রামে ৮ বছর বয়সী শিশু জুঁই খাতুনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকাবাসী আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে।
বুধবার (১৪ মে) শিশু জুঁই এর বাড়ির সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে স্থানীয় বাসিন্দা, ছাত্র সংগঠন এবং শিশু জুঁই এর পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, শিশু জুঁই হত্যাকাণ্ডের রহস্য এখনো পুরোপুরি উদঘাটিত হয়নি। তারা অভিযোগ করেন, পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও প্রকৃত আসামিদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি। এলাকাবাসী ও নিহত শিশুর পরিবার মনে করছেন, অভিযুক্তরা প্রকৃত দোষীদের আড়াল করে রেখেছে। তারা দাবি করেন, সিয়াম নামে এক আসামির ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করা জরুরি।
বক্তারা আরও বলেন, শিশু জুঁই এর মৃত্যু একটি ভয়ংকর ঘটনা। ১৫ এপ্রিল সকালে পার্শ্ববর্তী চাটমোহর উপজেলার রামপুর বিলে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। মুখে পোড়া ক্ষত এবং বিবস্ত্র লাশটি দেখে সবাই হতবাক হন। নিহত শিশু জুঁই ছিল মালয়েশিয়া প্রবাসী জাহিদুল ইসলামের মেয়ে এবং গারফা আজেদা নূরানী কিন্ডার গার্ডেনের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত পাঁচজনের স্বীকারোক্তিতে বলা হয়েছে যে, তারা পহেলা বৈশাখের দিন গাঁজা সেবন এবং খারাপ মেয়ে নিয়ে আনন্দ করার পরিকল্পনা করেছিল। তবে অর্থের অভাবে তারা গাছে বসে গাঁজা সেবন করছিল। তখন শিশুটি তাদের চোখে পড়ে গেলে তারা পাশবিকতা ও হত্যার নৃশংসতা চালায়। অভিযুক্তরা দাবি করে, শিশুটিকে ধর্ষণ এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। পরে লাশের মুখে অ্যাসিড জাতীয় তরল দিয়ে দগ্ধ করার চেষ্টাও করে।
অভিযুক্তরা হলেন, গড়ফা গ্রামের সুলতান হোসেনের ছেলে সোহেল রানা (২৫), গারফার শেখ সাদি (১৬), দুলাল হোসেনের ছেলে শাকিব (১৬), গারফার শাহীন আলমের ছেলে সিয়াম (১৩) এবং চাটমোহর উপজেলার শফিকুল ইসলামের ছেলে আবদুল্লাহ (১৬)।
এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার এই ঘটনার সুষ্ঠু ও দ্রুত বিচার দাবি করে বলেন, প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তারা জানান, এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্য কোন ষড়যন্ত্র বা ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকতে পারে, যা তদন্তের মাধ্যমে বের করে আনা জরুরি।
নাটোরের পুলিশ বলছে, তারা মামলার তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার ও বিচারের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে এলাকাবাসী এবং শিশুর পরিবারের দাবি, এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে আরও কঠোর ও স্বচ্ছ তদন্তের প্রয়োজন।
১২০ বার পড়া হয়েছে