জামায়াতের নিবন্ধন বৈধতা নিয়ে আপিলের রায় ১ জুন

বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫ ৮:০১ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের রায় ঘোষণার জন্য আগামী ১ জুন দিন নির্ধারণ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
বুধবার (১৪ মে) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ শুনানি শেষে এ দিন ধার্য করেন। দীর্ঘদিন ধরে চলা এ আপিল মামলার শুনানি এদিন শেষ হয়।
জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বৈধতা নিয়ে আইনি লড়াই শুরু হয় ২০০৯ সালে, যখন সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ জন ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধনকে অবৈধ ঘোষণা করে। একইসঙ্গে আপিল করার অনুমতি দিয়েছিলেন আদালত।
ওই বছরের মধ্যেই দলটি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত আপিল ও লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতির আবেদন) করে। একই সঙ্গে দলীয় প্রতীক 'দাঁড়িপাল্লা' বরাদ্দের বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে আরেকটি আবেদন করে জামায়াত। তবে সর্বশেষ শুনানিতে এ আবেদনটি প্রত্যাহারের কথা জানান আপিলকারী পক্ষের আইনজীবীরা।
শুনানিতে জামায়াতের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক, ইমরান এ সিদ্দিক ও মোহাম্মদ শিশির মনির। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের ফুল কোর্ট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীকটি শুধুমাত্র ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের মনোগ্রামে ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত হয়। এ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে এ প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের রায় অনুসরণ করে ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন প্রজ্ঞাপন জারি করে। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর আপিল বিভাগ জামায়াতের আপিল ও লিভ টু আপিল খারিজ করে দেয়। তবে পরবর্তীতে দেরি মার্জনার আবেদন মঞ্জুর করে আবারও মামলাটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ওঠে।
এক সময়কার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২৪ সালের ১ আগস্ট জামায়াত ও শিবিরকে নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল। তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করলে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয় এবং পরে ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।
সবশেষ শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আগামী ১ জুন রায়ের দিন ধার্য করেছে। এ রায় রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে পুনরায় নিবন্ধন পাওয়ার সুযোগ করে দেবে কি না—তা নির্ধারিত হবে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে।
১১৬ বার পড়া হয়েছে