রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত, প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

রবিবার, ১১ মে, ২০২৫ ১২:১২ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) ১৮ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
একইসঙ্গে তাঁদের প্রকল্প এলাকার নির্মাণ এলাকা ও গ্রিনসিটি আবাসিক জোনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) এনপিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. জাহেদুল হাছান স্বাক্ষরিত দুটি আলাদা চিঠিতে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। গত শনিবার (১০ মে) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা চিঠিগুলো হাতে পান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রকল্পের সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস।
চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন ডেপুটি চিফ সুপারিনটেন্ডেন্ট, সহকারী ব্যবস্থাপক, উপসহকারী ব্যবস্থাপক ও টেকনিশিয়ানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ১৮ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তাঁদের মধ্যে ১২ জন বুয়েট থেকে পাস করা প্রকৌশলী এবং সবাই রাশিয়া থেকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প–সম্পর্কিত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
অব্যাহতিপত্রে বলা হয়েছে, “কোম্পানির আর তাঁদের প্রয়োজন নেই” এবং ৮ মে থেকে অব্যাহতি কার্যকর ধরা হয়েছে। তবে তাঁরা নোটিশ পেমেন্ট হিসেবে তিন মাসের বেতন পাবেন।
পাশাপাশি, আলাদা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, “নিরাপত্তার স্বার্থে” বরখাস্তকৃতদের রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প ও গ্রিনসিটি আবাসিক এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ।
চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, তাঁরা সবাই দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিলেন। তাঁদের দাবি, এনপিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের “স্বেচ্ছাচারিতার” প্রতিবাদ করায় তাঁদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে তাঁরা “অবৈধ ও প্রতিহিংসাপরায়ণ” বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং অব্যাহতি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় তাঁরা আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী বলেন, “আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবি তুলে ধরেছিলাম, কিন্তু আমাদের দমন করা হয়েছে। পরিবার নিয়ে প্রকল্প এলাকা ছাড়ার জন্য তিন দিনের সময় দেওয়া হয়েছে, এতে আমরা চরম সমস্যায় পড়েছি।”
অন্যদিকে, এনপিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাহেদুল হাছান বলেন, “কোনো স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ সঠিক নয়। প্রতিষ্ঠানিক তদন্ত ও প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোম্পানির শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত।”
উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস ধরে এনপিসিবিএলের কর্মকর্তাদের একটি অংশ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অপসারণসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন। ৬ মে ঈশ্বরদীতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন এবং ৭ মে প্রকল্প এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।
১২৫ বার পড়া হয়েছে