ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতিতে বিশ্ব নেতাদের স্বাগত

রবিবার, ১১ মে, ২০২৫ ৯:৩০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
চারদিনের প্রাণঘাতী সংঘাতের পর ‘সম্পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী, ভারত ও পাকিস্তান।
শনিবার (১০ মে) ঘোষিত এই যুদ্ধবিরতিকে বিশ্বব্যাপী নেতৃবৃন্দ স্বাগত জানিয়েছেন এবং শান্তি প্রক্রিয়া টিকিয়ে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
এই সংঘাতের সূচনা হয় গত ২২ এপ্রিল, যখন ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে এক বন্দুক হামলায় অন্তত ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। ঘটনার জন্য ভারত দায় চাপায় পাকিস্তানের ওপর, যদিও ইসলামাবাদ সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এবং একটি নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়।
পরবর্তীতে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। ভারত পাকিস্তানের ভেতরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যাতে বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানায়, ভারতের এসব হামলায় ৩৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৭৬ জন আহত হয়েছেন। জবাবে পাকিস্তান দাবি করে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে এবং নিয়ন্ত্রণ রেখাজুড়ে (এলওসি) একাধিক তল্লাশি চৌকিতে পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
এই উত্তেজনার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুই দেশ একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়, যা শনিবার থেকে কার্যকর হয়।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে এই পদক্ষেপকে শান্তির পথে একটি ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। একইসঙ্গে, তুরস্ক, চীন, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য ও ইরান সহ একাধিক দেশ যুদ্ধবিরতির প্রশংসা করেছে এবং দুই দেশকে দীর্ঘস্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জানান, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই তাঁকে ফোন করে পাকিস্তানের সংযত অবস্থানের প্রশংসা করেছেন। অন্যদিকে, তুরস্ক ও সৌদি আরবের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকেও যুদ্ধবিরতিকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি এক্সে দেওয়া পোস্টে লিখেছেন, “ভারত-পাকিস্তানের আজকের যুদ্ধবিরতিকে দারুণভাবে স্বাগত জানাই। উভয় পক্ষের উচিত এই অবকাশকে ব্যবহার করে উত্তেজনা প্রশমন ও স্থায়ী সমাধানের পথে এগিয়ে যাওয়া।”
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিবৃতিতে বলেছে, এই যুদ্ধবিরতি অঞ্চলজুড়ে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মাধ্যমে সাময়িকভাবে উত্তেজনা প্রশমিত হলেও, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের অবিশ্বাস ও রাজনৈতিক জটিলতা নিরসনে কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ ও স্থায়ী সংলাপ প্রয়োজন।
১২৪ বার পড়া হয়েছে