নারীদের যৌনশ্রমিকের মর্যাদা: সম্মান নাকি তিরস্কার!

শুক্রবার, ৯ মে, ২০২৫ ৯:০৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
পতিতাদের যৌনশ্রমিকের মর্যাদা নয় বরং সঙ্গমে প্রটেকশন নিশ্চিত করুন।
পলাশ সাহার জায়গায় যদি সুস্মিতা সাহা হতো তাহলে দেখা যেত পতিতাশ্রমিকদের মাতম! ক'দিন আগে হাইকোর্টের এক নারী আইনজীবীর কাছে এক ছোটভাইকে পাঠিয়েছিলাম। ছোটভাইকে সামনে রেখে তার বউ ভিডিওকলে অন্যছেলেদের সঙ্গে কথা বলে অশালীন ড্রেস পরে, বেটিং সাইটে জুয়া খেলে। স্বামীকে ব্ল্যাকমেইলিং করে টাকা নিয়ে পরিবারকে দেয়। কাবিনও করেছে সামর্থ্যের বাইরে।- এটার কোনো আইনি প্রক্রিয়া আছে কিনা জানতে চাইলেই অ্যাডভোকেট বললেন- মেনে নিতে হবে। এ দেশে পুরুষদের জন্য কোনো আইন নেই। বাস্তবতা কিন্তু এটাই।
অন্তবর্তীসরকার ১১টি সংস্কার কমিশন করেছে। তার মধ্যে একটি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন। প্রস্তাবনাগুলো আমি মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। আমার কাছে মনে হয়েছে নারী সংস্কার কমিশনের মুখ্য সুপারিশই- পুরুষকে নারীর প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানো। অথচ পুরুষ নারীর প্রতিপক্ষ নয়, নারী পুরুষের পরিপূরক। কোন ধর্ম নারীর প্রতি বৈষম্য সৃষ্টি করেনি বরং নারীকে সম্মানিত ও মর্যাদাশীল করেছে।
নারী কমিশনের চেয়ারম্যান শিরীন পারভিন হক স্পষ্ট বলেছেন তিনি কোনো মুসলিম নারী স্কলারকে সংস্কারকাজে সহায়তা করার প্রয়োজনীয়তা মনে করেননি! তাহলে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্টার দেশে এই সংস্কার কার জন্য? শিরীন পারভীন হক- আপনি আপনার মা-বোন-কন্যাসহ আপনার পরিবারের সব নারী সদস্যদের দিয়ে পতিতাবৃত্তি করিয়ে শ্রমিকের মর্যাদা অর্জন করুন। পতিতাবৃত্তি তো দেশে চলছেই। কেউ তো বাধা দিচ্ছে না। তবে আপনার সংস্কার প্রস্তাবনায় আপনি একটি পয়েন্ট যোগ করতে পারতেন- সেটি হচ্ছে প্রটেকশন ছাড়া কেউ পতিতাদের সঙ্গে সঙ্গম করতে পারবেন না। বিষয়টি অনেকটা ইতিবাচক হতো! তবে এটাও মনে রাখতে হবে- দেশে বর্তমানে এইডস রোগীর সংখ্যা সাড়ে ১২ হাজার। এটি শুধুমাত্র খাতাকলমের হিসেব। বাস্তবে এ সংখ্যা আরো অনেক!
আমাদের দেশে অধিকাংশ পারিবারিক সংঘাতই জমিজমা ভাগাভাগি নিয়ে। জমি বন্টনে ইসলাম একটি সুন্দর সমাধান দিয়েছে। সেটিই চলছিল। আপনারা ধর্মীয় মূল্যবোধকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সমান সমান ভাগ করে দিলেন। তাহলে দেখা যাবে পুরো বাংলাদেশ হবে তখন রেসলিং ময়দান! মোদ্দাকথা হচ্ছে- বাংলাদেশে ধর্মীয় ও পারিবারিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে নারী সংস্কার নীতিমালা প্রণয়নের বিকল্প নেই। যেখানে সবধর্মের নারীবোদ্ধাদের অংশগ্রহণ থাকবে। এ প্রজন্মের সামাজিক নেত্রীদের অংশগ্রহণ থাকতে হবে।
এলজিআরডিসহ কয়েকটি সংস্কার কমিশনের সঙ্গে সরাসরি কাজ করার সুযোগ হয়েছে আমার। অধিকাংশ কমিশনই স্টেকহোল্ডাদের মতামত গ্রহণ করেছে। এলজিআরডি সংস্কার কমিশনই নিয়েছে লক্ষাধিক মানুষের মতামত। অথচ নারী কমিশন কী এমন কারো মতামত নিয়েছে? আমার জানামতে নেয়নি। তাদের নিজস্ব মতাদর্শই সব নারীসমাজের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। এটা এক ধরনের অপরাধ।
লেখক: মো: মনিরুল ইসলাম, সিনিয়র রিপোর্টার, মোহনা টিভি
৩২৮ বার পড়া হয়েছে