সাড়ে ৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ: পাবনায় এনজিও মালিক ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে মানববন্ধন

বুধবার, ৭ মে, ২০২৫ ২:০৮ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
সঞ্চয় ও ডিপিএসের নামে প্রায় ২৫০ জন গ্রাহকের কাছ থেকে সাড়ে ৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আত্মগোপনে চলে গেছেন পাবনার বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ‘মেঘনা এমসিসিএস লিমিটেড’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল কাইয়ুম ও তার স্ত্রী রঞ্জনা খাতুন।
তিন মাস ধরে তারা পলাতক রয়েছেন, বন্ধ রয়েছে অফিসও। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অসংখ্য দরিদ্র নারী গ্রাহক।
বুধবার (৭ মে) দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাবের সামনে আব্দুল হামিদ সড়কে ভুক্তভোগীরা মানববন্ধনে অংশ নেন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরতের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
মানববন্ধনে উপস্থিত নারী গ্রাহকরা জানান, ২০১১ সালে পাবনা শহরের দিলালপুর এলাকায় ‘মেঘনা এমসিসিএস লিমিটেড’ নামে এনজিওটি কার্যক্রম শুরু করে। আব্দুল কাইয়ুম ছিলেন এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং তার স্ত্রী রঞ্জনা খাতুন চেয়ারম্যান। তারা একাধিক নারী মাঠকর্মী নিয়োগ দিয়ে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দরিদ্র মহিলাদের দ্বিগুণ মুনাফার লোভ দেখিয়ে সঞ্চয় ও ডিপিএস খাতে অর্থ সংগ্রহ করেন।
গ্রাহকদের অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে মেয়াদ পূর্ণ হওয়া সঞ্চয় ও ডিপিএসের টাকা ফেরত চাইলে কাইয়ুম নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করেন। একপর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় তালাবদ্ধ করে তিনি ও তার স্ত্রী আত্মগোপনে চলে যান।
ভুক্তভোগী আফসানা খাতুন জানান, তিনি এনজিওটিতে ২৩ লাখ টাকা জমা রেখেছিলেন। এখন সেই অর্থ আদায়ের কোনো উপায় পাচ্ছেন না।
মাঠকর্মী সুলতানা খাতুন জানান, তার মাধ্যমে প্রায় ৮০ লাখ টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে জমা দেওয়া হয়েছে। এখন প্রতারণার দায়ে গ্রাহকরা তার বাড়িতে এসে চাপ দিচ্ছেন, অথচ মালিকপক্ষ পলাতক।
নিপা আক্তার নামে আরেক মাঠকর্মী বলেন, “আমার মাধ্যমে প্রায় ৪০ লাখ টাকা জমা হয়েছে। আমি নিজেই প্রতারিত, এখন সবাই আমাকে দোষারোপ করছে।”
রেহেনা খাতুন নামে এক গ্রাহক বলেন, “দুই মেয়ের বিয়ের জন্য জমানো ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ডিপিএস করেছিলাম। এখন টাকাগুলোর আর কোনো হদিস নেই।”
অন্যদিকে, বলরামপুর গ্রামের ময়না খাতুন জানান, তার পরিবারের চারজন সদস্যের নামে ১৫ লাখ টাকা জমা ছিল এনজিওটিতে। এখন তারা অর্থ ফেরতের কোনো আশাই দেখতে পাচ্ছেন না।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, এখনো পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানটির দিলালপুরের প্রধান কার্যালয়েও গিয়ে তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।
১১৬ বার পড়া হয়েছে