গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনা বাতিল হামাসের, ইসরাইলের অভিযানের নিন্দা আন্তর্জাতিক মহলে

মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫ ১১:৫২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
গাজায় ইসরাইলের সামরিক অভিযান ও অবরোধকে “ক্ষুধা ও গণহত্যার যুদ্ধ” হিসেবে আখ্যা দিয়ে হামাস সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আর কোনো আলোচনা সম্ভব নয়।
মঙ্গলবার (৬ মে) এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ও গাজার সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাসেম নাঈম বলেন, “গাজা উপত্যকায় ক্ষুধা ও গণহত্যার যুদ্ধ যতদিন চলবে, ততদিন যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো প্রস্তাবের আলোচনায় বসা অর্থহীন।”
নাঈম আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান, যেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে এই অভিযান বন্ধ করতে চাপ সৃষ্টি করা হয়।
এদিকে, ইসরাইল গাজায় সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়েছে। এক ইসরাইলি কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, এ পরিকল্পনার মধ্যে গাজার “অধিকাংশ মানুষকে স্থানচ্যুত” করার কথা রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরাইলে হামলার পর থেকে চলমান সংঘর্ষ এবং চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে আরোপিত অবরোধের ফলে প্রায় সব গাজাবাসী একাধিকবার ঘরছাড়া হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৮ মার্চ থেকে ইসরাইলি হামলায় ২,৪৫৯ জন নিহত হয়েছে, যা মোট মৃতের সংখ্যা ৫২,৫৬৭-এ পৌঁছেছে। মঙ্গলবার ভোরে ইসরাইলি হামলায় এক শিশুসহ আরও তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসরাইলের নতুন অভিযানের পরিকল্পনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, “এই পরিকল্পনার ফলে বিপুলসংখ্যক বেসামরিক মানুষের মৃত্যু এবং গাজার আরও ধ্বংস অনিবার্য হবে। গাজা অবশ্যই ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ থাকতে হবে।”
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাঁ-নোয়েল বারো এক রেডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, “ইসরাইলের এই পরিকল্পনা গ্রহণযোগ্য নয় এবং এটি আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের এই জোরপূর্বক স্থানান্তর ১৯৪৮ সালের ‘নাকবা’ বা বিপর্যয়ের স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে, যা ফিলিস্তিনি ইতিহাসে গণচ্যুতির প্রতীক হিসেবে পরিচিত।
১২৩ বার পড়া হয়েছে