সর্বশেষ

সারাদেশ

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বাড়ছে, কক্সবাজারে নতুন করে ঢুকেছে আরও ৫ হাজার

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার প্রতিনিধি

রবিবার, ৪ মে, ২০২৫ ৪:১০ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক দিনে নতুন করে আরও পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে।

২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ১ মে পর্যন্ত এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজারে।

সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নতুন করে আসা রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ বিদ্যালয়সহ ক্যাম্পের স্থাপনাতেও আশ্রয় নিচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর) বাংলাদেশ সরকারকে একটি চিঠি দিয়ে নতুন রোহিঙ্গাদের আবাসনের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানালেও, এখনো সে চিঠির জবাব দেয়নি বাংলাদেশ। মিজানুর রহমান বলেন, “তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে নতুন করে ঘর বানিয়ে দেওয়ার মতো অবস্থায় আমরা নেই। বরং আমরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ওপর জোর দিচ্ছি।”

রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি এবং আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)-র মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব এবং দমন-পীড়নের কারণে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। জানা গেছে, আরাকান আর্মি বর্তমানে রাখাইনের মংডু এলাকার বুড়া শিকদাপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামে হামলা চালিয়ে রোহিঙ্গাদের হয়রানি করছে।

জাদিমুড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া আমির হোসেন জানান, তার গ্রামে আরাকান আর্মি গুলি ছুড়ে ও মাইকিং করে সবাইকে মাঠে জড়ো করে আরসার আশ্রয়দাতাদের নাম প্রকাশের জন্য চাপ দেয়। অনেককে রোদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখার ঘটনাও ঘটেছে।

রোহিঙ্গা নেতা মো. জুবায়ের জানান, আরাকান আর্মি চারটি গ্রামে হামলা চালিয়েছে। উদ্দেশ্য, যেকোনো অজুহাতে রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করা।

এদিকে শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা সৈকতের মুসলিমাবাদ বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে নারী ও শিশুসহ ৩৫ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে র‍্যাব। র‍্যাব-৭-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক এ আর এম মোজাফফর হোসেন জানান, তারা নৌকায় করে মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের পতেঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, দালালের মাধ্যমে জনপ্রতি দুই হাজার টাকায় তাদের বাংলাদেশে আনা হয়। তবে তারা ভাসানচর থেকে এসেছে নাকি সরাসরি মিয়ানমার থেকে, তা যাচাই করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বিজিবি টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, নাফ নদী ও স্থলপথে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মাদক ও মানবপাচার রোধেও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।

বর্তমানে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে পুরাতন ১২ লাখ রোহিঙ্গার পাশাপাশি নতুন ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। জাতিসংঘের চিঠি থাকলেও, বাংলাদেশ সরকার আপাতত নতুনভাবে আবাসন নির্মাণে প্রস্তুত নয়। বরং রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার।

১০২ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন