কাশ্মীরে ভয়াবহ হামলার পর তীব্র হুঁশিয়ারি মোদীর

বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ ১১:২৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
কাশ্মীরের পর্যটকদের লক্ষ্য করে চালানো ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর দুইদেশে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ২২ এপ্রিলের এ হামলাকে ১৯৮৯ সালের পর থেকে পর্যটকদের ওপর সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা বলে অভিহিত করা হচ্ছে।
হামলার পরপরই কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “ভারত প্রত্যেক সন্ত্রাসী ও তাদের মদতদাতাকে খুঁজে বের করে শাস্তি দেবে।”
জবাবে ভারত ২৭ এপ্রিল দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মহড়ার মাধ্যমে সামরিক শক্তি প্রদর্শন করেছে। একইসঙ্গে পাকিস্তানি কূটনীতিক বহিষ্কার, ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত এবং সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা দুই দেশের মধ্যে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি করেছে।
হামলার দায় প্রথমে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (TRF) নামের একটি গোষ্ঠী স্বীকার করলেও পরে জানায়, তাদের সামাজিকমাধ্যম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল। ভারতীয় গোয়েন্দাদের দাবি, পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার (LeT) সঙ্গে TRF-এর যোগসূত্র রয়েছে, যদিও তা প্রমাণিত হয়নি।
স্থানীয় পুলিশ দুই পাকিস্তানি ও এক ভারতীয় সন্দেহভাজনের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভারত প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিলেও বিশ্লেষকদের মতে, সরাসরি যুদ্ধের আগে নির্ভরযোগ্য প্রমাণ ও কৌশলগত লাভের হিসাব গুরুত্বপূর্ণ।
২০১৬ ও ২০১৯ সালে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে হামলা চালায়। তবে এই মুহূর্তে সামরিক উত্তেজনা দ্রুত যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাকিস্তান এরই মধ্যে এক ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে এবং সম্ভাব্য হামলার ব্যাপারে সতর্ক বার্তা দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতিক্রিয়ায় সীমিত সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণযোগ্য হলেও সরাসরি সেনাঘাঁটিতে হামলা অনুচিত হবে, যদি না পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততার পরিষ্কার প্রমাণ পাওয়া যায়।
যুদ্ধ ছাড়াও ভারতের কাছে কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগের নানা কৌশল রয়েছে—যেমন আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তথ্য তুলে ধরা বা আর্থিক সহায়তা থামাতে তদবির করা। ভারতের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করাও একটি বার্তা বহন করে—সহযোগিতার পথই পাকিস্তানের জন্য লাভজনক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত যদি দীর্ঘমেয়াদে সামরিক আধুনিকায়ন ও আঞ্চলিক নেতৃত্বে মনোযোগ দেয়, তবে কেবল পাকিস্তান নয়, চীনের সঙ্গেও শক্তির ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হবে। বাস্তবে ভারতের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামাবাদ নয়, বেইজিং।
১২০ বার পড়া হয়েছে