কাশ্মীরের সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সেনা মোতায়েন, অভিযানের শঙ্কা

মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ৮:০৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন ভারতীয় পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
২২ এপ্রিলের ওই হামলার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে টানা পাঁচ দিন ধরে গোলাগুলি চলছে।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে প্রতিদিন রাতভর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে, যদিও এখন পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে দেশটির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ভারত। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ঘোষণা করেছে, তারা সিমলা চুক্তিসহ ভারতের সঙ্গে বিদ্যমান সব দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্থগিত করেছে। এর ফলে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ অঞ্চলে রাতভর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সীমান্ত এলাকা।
কাশ্মীর থেকে ডয়চে ভেলে’র স্থানীয় সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, প্রতি রাত ১২টার পর গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে এবং ভোর নাগাদ তা বন্ধ হচ্ছে। সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় বাহিনী ব্যাপকভাবে সেনা মোতায়েন করছে এবং ঘন ঘন সেনা চলাচল দেখা যাচ্ছে।
এদিকে নিউইয়র্ক টাইমস ২৭ এপ্রিলের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিশ্বের অন্তত ১২টি দেশের নেতার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন এবং নয়াদিল্লিতে অবস্থিত শতাধিক কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
কূটনৈতিক সূত্রমতে, এই প্রচেষ্টা উত্তেজনা প্রশমনের জন্য নয়, বরং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে।
অবশ্য প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর এক ভাষণে "সন্ত্রাসী আস্তানাগুলো ধ্বংস" এবং "কঠোর শাস্তি" দেওয়ার কথা বললেও পাকিস্তানের নাম সরাসরি উল্লেখ করেননি।
কাশ্মীরে বর্তমানে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান চালাচ্ছে। হামলার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে চলছে ব্যাপক তল্লাশি ও গ্রেপ্তার অভিযান। এখন পর্যন্ত শত শত মানুষকে আটক করা হয়েছে।
এছাড়া, পাকিস্তানের দিকে বয়ে যাওয়া নদীগুলোর পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে আনার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। একইসঙ্গে পাকিস্তানি দূতাবাসের কিছু কর্মী ও ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশত্যাগের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সোমবার রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, "কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার পর ভারতের সামরিক অভিযানের সম্ভাবনা অত্যন্ত প্রকট।"
চলমান পরিস্থিতিতে দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগ বিরাজ করছে।
১০৮ বার পড়া হয়েছে