নকশাহীন রেস্তোরাঁগুলোর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল হওয়ায় ভবিষ্যৎ কি

মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ৬:৪৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
নকশায় রেস্তোরাঁর উল্লেখ না থাকা ভবনগুলোতে পরিচালিত রেস্তোরাঁগুলোর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
সোমবার এই সংক্রান্ত একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে সিটি করপোরেশন। এতে শহরের শত শত রেস্তোরাঁ মালিক ও ব্যবসায়ী অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন।
ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান জানান, ট্রেড লাইসেন্স বাতিলের পর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে রেস্তোরাঁগুলো বন্ধে অভিযান চালানো হতে পারে। তিনি বলেন, “ব্যবসায়ীদের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করা হবে কি না, তা নিয়ে ভাবা হচ্ছে।”
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১ হাজার ২৬টি রেস্তোরাঁ ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে এর মধ্যে কতটি বৈধভাবে নিবন্ধিত—তা নির্ধারণে কাজ চলছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, ঢাকায় মাত্র ১৩৪টি রেস্তোরাঁ বৈধ লাইসেন্স নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে।
রেস্তোরাঁ মালিকদের অভিযোগ, বৈধভাবে একটি রেস্তোরাঁ চালু করতে হলে সাতটি সরকারি সংস্থার অনুমোদন নিতে হয়, যা প্রক্রিয়াটিকে অত্যন্ত জটিল করে তোলে। ফলে বেশিরভাগ রেস্তোরাঁ মালিক এসব অনুমোদন নিতে পারেন না। এই জটিলতার সুযোগে অসাধু কর্মকর্তারাও লাভবান হন বলে দাবি করেন তারা।
বিষয়টি আলোচনায় আসে ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডের ‘গ্রিন কোজি কটেজ’ ভবনের অগ্নিকাণ্ডের পর, যেখানে ৪৬ জনের মৃত্যু ঘটে। সেই ঘটনায় জানা যায়, ভবনটির আটটি রেস্তোরাঁর কোনোটিই নকশায় অনুমোদিত ছিল না।
রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, “রাজউকের অনুমোদিত নকশায় সাধারণত রেস্তোরাঁ থাকে না। আগে এই সমস্যা সমাধানে একটি টাস্কফোর্স গঠন হলেও কার্যত কোনো অগ্রগতি হয়নি।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “যদি ডিএসসিসি ট্রেড লাইসেন্স বাতিলের পর অভিযান শুরু করে, তাহলে অনেক ব্যবসায়ীকে বাধ্য হয়ে রেস্তোরাঁ বন্ধ করতে হবে।”
বিশ্লেষকদের মতে, রাজধানীতে নানা অনিয়মে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে হঠাৎ কড়াকড়ি না করে, দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য একটি বাস্তবভিত্তিক নীতিমালা গ্রহণ করা জরুরি।
১০৫ বার পড়া হয়েছে