নতুন এক লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ, নতুনদের ঘর করে দিতে জাতিসংঘের চিঠি

সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫ ৬:১২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে গত শনিবার পর্যন্ত নতুন করে ১ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, যার ফলে মোট রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লাখ ১৩ হাজারে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশ সরকার এবং জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) ইতোমধ্যে তাদের আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করেছে। এরতি, নতুন রোহিঙ্গাদের আইরিশের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের অনুমোদন এখনও মেলেনি।
ইউএনএইচসিআর গত সপ্তাহে বাংলাদেশকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে, যাতে নতুন আসা রোহিঙ্গাদের জন্য আবাসস্থলের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করা হয়েছে। গতকালের সংবাদ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে আজ পর্যন্ত দেশে এসেছে নতুন রোহিঙ্গাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যা গত বছরের মে-জুন মাসের পর দেখা যায়। বর্তমানে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রতি দিনই প্রবেশ করছে।
শুধু গত সপ্তাহে ১ হাজার ৪৪৮টি পরিবার এবং ৫ হাজার ৯৩০ জন পৃথকভাবে আসা রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ১ লাখ ১৩ হাজার নতুন রোহিঙ্গার মধ্য ৫৩.৭৭% মহিলা এবং বাকিরা পুরুষ।
নতুন আসা রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগই কক্সবাজারে ২০টি শরণার্থী ক্যাম্পে তাদের আত্মীয়দের কাছে আশ্রয় নিয়েছে। ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, নতুন রোহিঙ্গাদের জন্য সামাজিক অবকাঠামো তৈরির প্রয়োজন। তবে, সরকার মৌখিকভাবে জানিয়েছে যে নতুন সংকটের কারণে তাদের জন্য আবাসস্থল তৈরি করা কঠিন।
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে ১২ লাখেরও অধিক রোহিঙ্গা মাঝে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফিরে পাঠানোর চেষ্টা করা, কিন্তু নতুন রোহিঙ্গাদের ঢুকে আশ্রয়ের চাপ বাংলাদেশকে আরও বেশি জটিল পরিস্থিতিতে ফেলছে।
আরআরআরসি কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান অনুপ্রবেশকারীদের আবাসস্থলে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে ইউএনএইচসিআর-এর চিঠির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং বলেছেন, নতুন রোহিঙ্গাদের জন্য ঘর নির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা তাদের কাছে নেই।
অন্যদিকে, রাখাইন রাজ্য থেকে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে আরাকান আর্মির সংঘাতের পর থেকে নতুন রোহিঙ্গাদের ঢল অব্যাহত রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসনের আসার পর থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য বাজেট সংকট দেখা দেয়। নতুন রোহিঙ্গাদের আবাসস্থলে অর্থায়নের জন্য সরকারের অনুমোদন মিললে দাতা সংস্থার কাছে অর্থ চাইবে ইউএনএইচসিআর।
নৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ১২ লাখ রোহিঙ্গার জন্য বাংলাদেশের অবস্থা ইতিমধ্যেই সংকটাপন্ন, এবং নতুন রোহিঙ্গাদের প্রবেশ দেশে এক ভিন্ন মাত্রার চাপ সৃষ্টি করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সহযোগিতার মাধ্যমে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে, যদিও প্রতিবছর প্রতিশ্রুত বরাদ্দ কমছে।
১০৫ বার পড়া হয়েছে