সর্বশেষ

জাতীয়

জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন হবে না এবারের পুলিশ সপ্তাহ

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫ ৪:২৮ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা একগুচ্ছ নির্দেশনা চূড়ান্ত করেছেন।

নিরপেক্ষতা বজায় রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক বা প্রভাবশালী চাপে না ঝুঁকতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিশেষভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আসন্ন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া তিনদিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিরপেক্ষ রাখতে এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের প্রেক্ষাপটে মাঠ পর্যায়ের চ্যালেঞ্জ এবং দাবি-দাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) এনামুল হক সাগর জানিয়েছেন, পুলিশ সপ্তাহের আলোচনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পাশাপাশি পুলিশের কার্যকর ভূমিকা ও কাঠামোগত উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হবে।

এবারের পুলিশ সপ্তাহ আগের বছরের মতো জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হচ্ছে না। রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে কোনো কুচকাওয়াজ বা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক থাকছে না। পাশাপাশি শিল্ড প্যারেড ও অন্যান্য প্রতিযোগিতাও বাতিল করা হয়েছে।

এবার অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। উদ্বোধনী দিনে তিনি পুলিশ সদস্যদের মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) প্রদান করবেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর পুলিশ কর্মকর্তারা মোট ১২ দফা দাবি উত্থাপন করবেন, যার মধ্যে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন। প্রস্তাবিত কমিশনে জনসাধারণের জন্য একটি অভিযোগ গ্রহণ সেল এবং পুলিশ সদস্যদের জন্য একটি প্রতিকার কমিটি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে—

এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ ভাতা চালু
আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামসহ বিভাগীয় হাসপাতাল উন্নয়ন
পুলিশ মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা
নারী-বান্ধব কর্মপরিবেশ সৃষ্টি
সাইবার অপরাধ দমন ইউনিট গঠন
যানবাহন এবং আবাসন সংকট সমাধান
মৃত পুলিশ সদস্যদের দাফন-সংক্রান্ত আর্থিক বরাদ্দ
পুলিশ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন ৩০ এপ্রিল সচিব এবং উপদেষ্টাদের সঙ্গে এসব দাবি নিয়ে আলোচনা হবে। আর ১ মে, শেষ দিনে প্রথমবারের মতো পুলিশ কর্মকর্তারা ধর্মীয় নেতা, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে আলোচনায় আসবে—জনগণ কী ধরনের পুলিশ বাহিনী দেখতে চায় এবং সেই অনুযায়ী বাহিনীকে ঢেলে সাজানোর উপায়।

পুলিশ সদর দপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশনই পারে বাহিনীকে সেবামুখী ও জবাবদিহিমূলক করতে।”

উল্লেখ্য, পূর্ববর্তী বছরগুলোতে পুলিশ সপ্তাহে গ্রেড-১ কর্মকর্তার সংখ্যা বৃদ্ধি, সুপারনিউমারারি পদ বৃদ্ধি, আধুনিক অস্ত্র সরবরাহ, বিমান ইউনিট গঠন, এবং পৃথক মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার মতো বহু দাবি উত্থাপিত হয়েছে।

যারা পদক পাচ্ছেন: 
বিপিএম (বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল) এবং পিপিএমের (প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল) জন্য ৬২ জন কর্মকর্তা প্রাথমিক নির্বাচন করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। তালিকায় রয়েছেন সাবেক আইজিপি মইনুল ইসলাম, র‌্যাবের মহাপরিচালক একেএম শহীদুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজিপি আবু নাসের মোহাম্মদ খালেদ, মোঃ আকরাম হোসেন, খোন্দকার রফিকুল ইসলাম, মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ, ছিবগাত উল্লাহ ও মাইনুল হাসান, ডিআইজি সরদার নুরুল আমিন ও কাজী মোঃ ফজলুল করিম,  চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ আহসান হাবিব পলাশ, সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ, জিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান,  ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূইয়া, অতিরিক্ত ডিআইজি আহমেদ মুঈদ ও এনায়েত হোসেন মান্নান, খাগড়াছড়ির এসপি মোঃ আরেফিন জুয়েল, ঢাকার মোঃ আনিসুজ্জামান, মাগুরার মিনা মাহমুদ, চট্টগ্রামের সাইফুল ইসলাম শান্তু, পিবিআইয়ের কুদরত-ই-খুদা, ৮ এপিবিএনের এসপি খন্দকার ফজলে রাব্বি, ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার রওনক আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম, এম, মোহাইমেনুর রশিদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেল, নীলফামারীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ, ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. জুয়েল রানা, ডিএমপির সহকারী পুলিশ সুপার এম জে সোহেল, দোহার সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. রাশেদুল ইসলাম বিশ্বাস, এপিবিএন উত্তরার পুলিশ পরিদর্শক গাজী গোলাম কিবরিয়া, পুলিশ সদর দপ্তরের ইন্সপেক্টর আবদুর রাজ্জাক আকন্দ, সিএমপির ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ ফজলুল কাদের চৌধুরী, কেএমপির ইন্সপেক্টর শফিকুল ইসলাম, আশুলিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুল হক ডাবলু, আলমডাঙ্গার ওসি মুঃ মাসুদুর রহমান, সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা পুলিশ পরিদর্শক মো. একরামুল হোসাইন, কাউনিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোস্তফা কামাল, পাবনা জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই শ্রী বেনু রায়, গাজীপুর জেলা পিবিআইয়ের এসআই সুমন মিয়া, গোদাগাড়ী মডেল থানা এসআই বরুন কুমার সরকার, কুমিল্লা জেলা পিবিআইর এসআই ফিরোজ আহাম্মদ, হবিগঞ্জ জেলার এসআই মাহমুদুল হাসান, মির্জাগঞ্জ থানার এসআই এনামুল হক, সিএমপির সোয়াট টিম কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের এসআই রাছিব খান, পুলিশ সদর দপ্তরের এসআই রকিবুল হাসান, ঢাকা জেলা পিবিআইয়ের এসআই ইমরান আহমেদ, সিরাজগঞ্জ জেলা পিবিআইয়ের এসআই মো. আশিকুর রহমান, মুন্সীগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই ইয়াসিন, খাগড়াছড়ি থানার এসআই আজিমুল হক, ঢাকার স্পেশাল ব্রাঞ্চে এএসআই কামরুজ্জামান, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল নিযুক্ত এএসআই নাজমুল হুসাইন, ভাটারা থানা এএসআই মেসবাহ উদ্দিন, র‌্যাব-১৫ এর হাবিলদার মো. সাইফুল ইসলাম, সচিবালয় নিরাপত্তা বিভাগের কনস্টেবল মো. রুহুল আমিন ভূঞা, ঢাকা এটিইউর কনস্টেবল হাবিবুর রহমান, পুলিশ সদর দপ্তরের কনস্টেবল মোহাম্মদ জোনাইদুল হক, ডিএমপির পরিবহন বিভাগের কনস্টেবল মোবারক হোসেন ও ডিএমপির পিওএম-পূর্ব বিভাগের  কনস্টেবল রিয়াদ হোসেন।

১০৯ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন