শিবালয়ে টিসিবির পণ্য উদ্ধার: ডিলার ও ইউপি সদস্য পলাতক

বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫ ৪:৫৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উথলী ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগে এক মুদি দোকানির বাড়ি থেকে ৩৪ লিটার সয়াবিন তেল ও ১৭ কেজি চিনি উদ্ধার করেছে স্থানীয় জনতা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে উথলী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় রোড এলাকার দোকানি নাজিমের বাড়ি থেকে এসব পণ্য উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, টিসিবির ডিলার উৎপল দাস গত শনিবার উথলী ইউনিয়নের ৪ থেকে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ১১০০ কার্ডধারীর মাঝে পণ্য বিতরণ করেন। তবে বিতরণ শেষে অবিক্রিত পণ্য নির্ধারিত গুদামে জমা না দিয়ে পার্শ্ববর্তী মুদি দোকানি নাজিমের কাছে বেশি দামে বিক্রি করেন। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে নাজিমের বাড়ি থেকে পণ্য উদ্ধার করে ডিলারের গুদামে জমা দেন।
ঘটনার পরপরই এলাকাবাসী প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় এক সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রভাবশালীদের ‘ম্যানেজ’ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেন এবং ডিলার উৎপল দাসকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন।
অভিযুক্ত দোকানি নাজিম স্বীকার করেছেন যে, তিনি পণ্য কিনেছিলেন এবং এটিকে ‘ভুল’ বলে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে, ডিলার উৎপল দাস ও সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মনোয়ারা বেগম ঘটনার পর থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ডিলার উৎপল দাস দীর্ঘদিন ধরেই দলীয় প্রভাব এবং প্রশাসনিক ‘ম্যানেজমেন্ট’-এর মাধ্যমে টিসিবির পণ্য কালোবাজারে বিক্রি করে আসছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসেও তিন শতাধিক কার্ডধারীর জন্য বরাদ্দকৃত টিসিবির পণ্যের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
উথলী ইউনিয়ন সচিব মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, “আমি এই অনিয়ম সম্পর্কে আগে অবগত ছিলাম না। আপনার মাধ্যমেই জানলাম।”
এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে ট্যাগ অফিসার মো. মিজানুর রহমান উপস্থিত না হয়ে ফিরে যান। তার বিরুদ্ধেও সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তবে তিনি ফোনে জানান, “টিসিবি পণ্য বাইরে বিক্রির সুযোগ নেই। যদি এমন কিছু ঘটে থাকে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাকির হোসেন বলেন, “সুবিধাভোগী ছাড়া অন্য কেউ টিসিবির পণ্য পাওয়ার কথা নয়। অভিযোগ সত্য হলে তদন্ত করে যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
১০৩ বার পড়া হয়েছে