কুয়েটে আমরণ অনশনের তৃতীয় দিন: অসুস্থ ২৭ শিক্ষার্থী

বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫ ৩:৫২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন আজ তৃতীয় দিনে পৌঁছেছে।
এ পর্যন্ত ২৭ জন শিক্ষার্থী শারীরিকভাবে গুরুতর দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তবুও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে অটল রয়েছেন।
সোমবার বিকেল ৪টা থেকে মোট ৩২ জন শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেন। তাদের মধ্যে তিনজন ব্যক্তিগত কারণে সরে দাঁড়ালেও, বাকি ২৯ জন আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। এর মধ্যে দুইজন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কুয়েট মেডিকেল সেন্টার ও সিটি মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন এই শিক্ষার্থীদের অবস্থা শঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের হামলার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়। হামলার ঘটনায় দায়সারা একটি মামলা দায়ের করা হলেও এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। একইসঙ্গে আন্দোলনকারী অনেক শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, উপাচার্য দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের প্রতি উদাসীনতা প্রদর্শন করে যাচ্ছেন এবং তাদের দাবি-দাওয়া উপেক্ষা করছেন। তারা জানায়, উপাচার্য অপসারিত না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে এবং প্রয়োজনে তারা জীবন দিতেও প্রস্তুত।
স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে গিয়ে দেখা যায়, তোষকের ওপর শুয়ে-বসে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। চারপাশে ঘুরছে স্ট্যান্ড ফ্যান, পাশে অবস্থান করছে মেডিকেল টিম এবং প্রস্তুত রাখা হয়েছে চারটি অ্যাম্বুলেন্স।
এদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) গঠিত তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আজ বুধবার কুয়েট ক্যাম্পাসে আসছেন। দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. তানজীম উদ্দিন খান। প্রতিনিধি দল সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সংকট নিরসনে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, আজ সকাল ১০টায় খুলনার শিববাড়ি মোড়ে উপাচার্য অপসারণের দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’, ‘দি রেড জুলাই’ এবং ‘ইনকিলাব মঞ্চ’-এর উদ্যোগে পৃথকভাবে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও ব্লকেড কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। একইসঙ্গে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ক্লাস বর্জনের পাশাপাশি দুপুর ২টায় জিরো পয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করে চলেছি এবং তাদের শারীরিক অবস্থার নিয়মিত খোঁজ রাখছি।”
১০৪ বার পড়া হয়েছে