সর্বশেষ

অপরাধ

আবারও শিশু অপহরণ নির্যাতন ভিক্ষাবৃত্তি, সন্তানকে দেখেও চেনেনি মা বাবা

এম এস রহমান, পাবনা
এম এস রহমান, পাবনা

মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫ ৬:২৪ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
ছয় মাস আগে অপহৃত ছয় বছরের শিশু সোয়াইব হোসেনকে অবশেষে খুলনা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া শিশুটি বর্তমানে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ২৬ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

তার শরীরজুড়ে সিগারেট ও কয়েলের ছ্যাঁকা, নখ উপড়ানোর দাগ এবং চরম অপুষ্টির ছাপ স্পষ্ট।

ঘটনার সূত্রপাত গত বছরের ২ অক্টোবর। পাবনা সদর উপজেলার চক ছাতিয়ানী এলাকার শিশু সোয়াইবকে ‘বিস্কুট খাওয়ানোর’ প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে একই উপজেলার শানির দিয়ার এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বিপ্লব (৩০)।

অপহরণের পর থেকেই শিশুটিকে এক কক্ষে আটকে রেখে চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। দিনের বেলায় বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষা করানো হতো তাকে।

শিশুটির মা সোহানা জাহান জানান, ঘটনার পরপরই তিনি পাবনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত বিপ্লব নিজেই ফোন করে সোয়াইবকে অপহরণ করার কথা স্বীকার করে। তবে বেশিরভাগ সময় তার মোবাইল বন্ধ থাকত, ফলে পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা চালায়।

অবশেষে গত ১৮ এপ্রিল খুলনার রূপসা ফেরিঘাট এলাকা থেকে ভিক্ষারত অবস্থায় সোয়াইবকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বিপ্লবকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে ১৯ এপ্রিল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শিশুটির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের প্রধান ডা. মাসুদুর রহমান প্রিন্স বলেন, “অত্যাচার ও অপুষ্টির কারণে সোয়াইবের অবস্থা গুরুতর। একটি আঙুল কেটে ফেলতে হতে পারে। সঠিক চিকিৎসা পেলে দুই মাসের মধ্যে তার উন্নতি আশা করা যাচ্ছে।”

মা সোহানা জাহান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “উদ্ধারের পর প্রথমে আমি নিজেই চিনতে পারিনি ছেলেটাকে। যে একসময় স্বাস্থ্যবান ও চঞ্চল ছিল, সে এখন একদম কঙ্কালসার। আমি অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই—তার ফাঁসি চাই।”

পাবনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, “এটি একটি অমানবিক ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। অভিযুক্ত ব্যক্তি শিশুটিকে প্রায় অচল করে তুলেছিল শুধুমাত্র ভিক্ষা করানোর জন্য। আমরা প্রযুক্তির সহায়তায় শিশুটিকে উদ্ধার ও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছি।”

১৪১ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
অপরাধ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন