সর্বশেষ

জাতীয়

শ্রমিকের মজুরি ৩ বছর পরপর পুনর্নির্ধারণের সুপারিশ কমিশনের

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫ ৩:৫০ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
বিভিন্ন খাতের শ্রমিকের মজুরি তিন বছর পরপর মূল্যায়ন ও পুনর্নির্ধারণের সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। 

বিভিন্ন খাতের শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও অধিকার সুরক্ষায় ২৫ দফা সুপারিশ উপস্থাপন করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে এই চূড়ান্ত প্রতিবেদন তুলে দেন সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদের নেতৃত্বাধীন ১৮ সদস্যের কমিশন।

প্রধান প্রস্তাবনা:
প্রতিবেদনে তিন বছর পরপর মজুরি কাঠামো মূল্যায়ন ও পুনর্নির্ধারণের পাশাপাশি বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধিকে মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্য করার সুপারিশ করা হয়েছে। বর্তমানে অধিকাংশ খাতের মজুরি পাঁচ বছর অন্তর হালনাগাদ হয়।

মজুরি সংক্রান্ত অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে:

নির্ধারিত তারিখে মজুরি না দিলে শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা (০.৫ শতাংশ হারে)
জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ
শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক
রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য আপৎকালীন তহবিল গঠন
নারী ও পরিবারবান্ধব পদক্ষেপ:
নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ১১২ দিন থেকে বাড়িয়ে ১৮০ দিন করার প্রস্তাব এসেছে কমিশনের পক্ষ থেকে। পাশাপাশি পিতৃত্বকালীন ছুটিও আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী নীতিমালা প্রণয়ন ও অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

ট্রেড ইউনিয়ন সহজীকরণ:
ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে বর্তমান স্বাক্ষরের হার-ভিত্তিক শর্তকে শ্রমিক সংখ্যার ভিত্তিতে নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন। এতে করে ইউনিয়ন গঠনে বাধা কমবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

আউটসোর্সিং ও স্থায়ী নিয়োগ:
সরকারি দপ্তরে স্থায়ী কাজে আউটসোর্সিং নিয়োগ বন্ধ এবং যারা ইতোমধ্যে আউটসোর্সিংয়ে নিযুক্ত আছেন, তাদের স্থায়ী করার সুপারিশ এসেছে। একইসঙ্গে দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের হার বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে আনার কথা বলা হয়েছে।

শ্রমিকদের জন্য পেনশন ও রেশনিং ব্যবস্থা:
প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের জন্য জাতীয় পেনশন স্কিমের অধীনে শ্রমিকবান্ধব একটি পেনশন ব্যবস্থা এবং কার্ডভিত্তিক রেশন সুবিধা চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে।

ভাষা ও মর্যাদার প্রশ্ন:
প্রতিবেদনে কর্মক্ষেত্রে মর্যাদাপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ‘তুই-তুমি’ সম্বোধন পরিহার এবং 'মহিলা' শব্দের পরিবর্তে 'নারী' শব্দ ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শ্রম আদালতসহ সব স্তরে বাংলা ভাষা ব্যবহারের বিষয়েও জোর দেওয়া হয়েছে।

সাংগঠনিক কাঠামোর প্রস্তাবনা:
স্থায়ী শ্রম কমিশন গঠন, জাতীয় সামাজিক সংলাপ ফোরাম এবং জাতীয় নিম্নতম মজুরি কমিশন প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনে নতুন দুটি অধিদপ্তর গঠনের কথাও বলা হয়েছে।

পরবর্তী পদক্ষেপ:
সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ জানান, প্রথম ধাপে শ্রমিকদের তথ্যভান্ডার গঠনের মাধ্যমে কাজ শুরু করা যেতে পারে। সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টা কমিশনকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ, এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

১১০ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন