বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন পারভেজের মা, ফিরলেই দেখেন ছেলে নেই

সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫ ৫:৩৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
রাজধানীর বনানীতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে তুচ্ছ ঘটনায় ছুরিকাঘাতে নিহত হন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২২)। এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার পরিবার ও গ্রামের জনপদে।
ঘটনার পরদিন রোববার বিকেল সাড়ে ৫টায় পারভেজের মরদেহ পৌঁছায় ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার কাইচান গ্রামে। মরদেহ গ্রহণের সময় স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন পারভেজের মা। কান্নার মাঝে তিনি বলছিলেন, “আমার পুতেরে আইনা দাও। আমি একটাবার তার মুখে মা ডাক শুনতে চাই।”
পারভেজের বাবা জসিম উদ্দিন ছেলের মৃত্যুসংবাদ শুনে কুয়েত থেকে দেশে ফিরেছেন। ছেলের নিথর দেহের পাশে বসে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, “তুচ্ছ বিষয়ে ওরা আমার ছেলেকে মেরে ফেলল! হাত-পা ভাঙলেও সে অন্তত বেঁচে থাকত, আমাকে বাবা বলে ডাকত। এখন আমি কাকে বাবা শুনব?”
শনিবার বিকেল ৪টার দিকে বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ ও টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন পারভেজ। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
রোববার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে পারভেজের মরদেহ প্রথমে নেওয়া হয় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, যেখানে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাতে তার গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।
নিহত পারভেজ ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় শনিবার রাতেই বনানী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন পারভেজের ভাই হুমায়ুন কবির। মামলায় আটজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন—মাহাথি, মেহেরাব, আবুজর গিফারী, সোহান তুষার নেয়াজ, হৃদয় মিয়াজী, রিফাত, আলী ও ফাহিম। অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বহিরাগত বলে জানা গেছে।
নিহতের পরিবার দ্রুত বিচার ও দায়ীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
১৩৪ বার পড়া হয়েছে