প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে নতুন প্রস্তাব, একমত নয় বিএনপি

সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫ ৪:১৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন—সংবিধান সংস্কার কমিশনের এমন সুপারিশের বিরোধিতা করেছে বিএনপি।
তারা বলেছে, একজন ব্যক্তি টানা দুবার প্রধানমন্ত্রী থাকার পর বিরতি দিয়ে আবার এ পদে আসার সুযোগ থাকতে হবে।
গতকাল জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি তাদের এ অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে। বৈঠকে কমিশনের পক্ষ থেকে নতুন একটি প্রস্তাবও উঠে আসে—মাঝখানে বিরতি দিয়ে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন। তবে বিএনপি জানিয়েছে, এ বিষয়ে দলীয় নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা করে পরে সিদ্ধান্ত জানাবে।
বিএনপির পক্ষে আলোচনায় অংশ নেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, নজরুল ইসলাম খানসহ অন্যান্য নেতারা। কমিশনের পক্ষে ছিলেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ।
ক্ষমতার ভারসাম্য ও রাষ্ট্রপতির ভূমিকা
সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়ানো এবং সরকার, সংসদ ও বিচার বিভাগের মধ্যে ভারসাম্য আনতে একটি জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিএনপি এনসিসির বিরোধিতা করেছে। তারা বলেছে, এতে সরকার দুর্বল হয়ে পড়বে এবং অনির্বাচিত ব্যক্তিরা ক্ষমতা পাবেন।
বিএনপি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে একটি আইনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে আইনটি কেমন হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তারা জানায়নি।
একই ব্যক্তি দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন কিনা
কমিশনের আরেকটি প্রস্তাব—একই ব্যক্তি দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা হতে পারবেন না—এটির বিরোধিতাও করেছে বিএনপি। দলটির মতে, এটি দলীয় অভ্যন্তরীণ বিষয়, সংবিধানে এটি নির্ধারণ করা উচিত নয়।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পদ্ধতি নিয়ে মতানৈক্য
কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন একটি ইলেকটোরাল কলেজের মাধ্যমে, যেখানে আইনসভা ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের ভোট থাকবে। তবে বিএনপি বলেছে, বাংলাদেশে ফেডারেল ব্যবস্থা নেই, তাই ইলেকটোরাল কলেজ বাস্তবসম্মত নয়। তারা শুধুমাত্র আইনসভার দুই কক্ষ থাকলে সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পক্ষে।
সংবিধান সংস্কারে সমঝোতা হয়নি, আলোচনা অব্যাহত
বৈঠকে সংবিধানের অধিকাংশ মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবের সঙ্গে বিএনপি দ্বিমত পোষণ করেছে। তাদের মতে, এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ভবিষ্যতের নির্বাচিত সংসদে। দলটি আবারও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।
বৈঠকের শেষে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, আলোচনা চলছে এবং অনেক বিষয়ে সম্মতি আসতে পারে। আলোচনার পরবর্তী ধাপ আগামীকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে।
১৩৮ বার পড়া হয়েছে