বাংলাদেশ হয়ে সেভেন সিস্টার্সে যাওয়ার রেল প্রকল্প স্থগিত করেছে ভারত

সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫ ৩:১৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন একাধিক রেল প্রকল্পে অর্থায়ন ও নির্মাণকাজ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে ভারত সরকার।
সরকারি সূত্র জানায়, ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে প্রায় ৫ হাজার কোটি রুপির প্রকল্প কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।
ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চল সংযোগের পরিবর্তে এখন নেপাল ও ভুটানের মাধ্যমে ‘সেভেন সিস্টার্স’কে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করার নতুন রেল যোগাযোগ পরিকল্পনায় জোর দেওয়া হচ্ছে। এই বিকল্প রুটে প্রায় ৩,৫০০ থেকে ৪,০০০ কোটি রুপির নতুন প্রকল্প বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।
স্থগিত হওয়া প্রধান রেল প্রকল্পগুলো:
১. আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ প্রকল্প
১২.২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই প্রকল্পের ৬.৭৮ কিমি বাংলাদেশের ভেতরে এবং ৫.৪৬ কিমি ভারতের ত্রিপুরায়। প্রায় ৪০০ কোটি রুপির এই প্রকল্পটি ভারতের অনুদানে বাস্তবায়নাধীন ছিল। এটির মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে সরাসরি রেল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্য ছিল।
২. খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন প্রকল্প
প্রায় ৩,৩০০ কোটি রুপির এই প্রকল্পটি ভারতের কনসেশনাল লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় ছিল। ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণের মাধ্যমে মোংলা বন্দরকে ভারতের রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল। ভারতের হাতে বন্দরের একটি টার্মিনাল পরিচালনার অধিকারও আসার কথা ছিল।
৩. ঢাকা-টঙ্গী-জয়দেবপুর রেল সম্প্রসারণ প্রকল্প
এই প্রকল্পের জন্য ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক থেকে ১,৬০০ কোটি রুপির অর্থায়ন প্রস্তাব ছিল। ২০২৭ সালের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো অর্ধেক কাজও শেষ হয়নি। অর্থ ছাড় ও প্রশাসনিক জটিলতা প্রকল্পের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করছে।
এছাড়াও পাঁচটি সম্ভাব্য রেল প্রকল্পের জরিপ কার্যক্রমও স্থগিত রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ভারত এখন বিকল্প রুট নিয়ে সক্রিয়। এর মধ্যে রয়েছে, বিরাটনগর-নিউ মাল (১৯০ কিমি) রেললাইন নির্মাণ, গালগালিয়া-ভদ্রপুর-কাজলি বাজার অংশে ১২.৫ কিমি রেললাইন,
কুমেদপুর-আমবাড়ি ফালাকাটা অংশে ১৭০ কিমি ও পশ্চিমবঙ্গ-বিহার সীমান্তে আরও ২৫ কিমি রেললাইন নির্মাণের কাজ
২০২৪ সালে বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ১২৯ কোটি ডলার, যা দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদারিত্ব। এই রেল প্রকল্পগুলো অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না ফিরলে প্রকল্পগুলোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
১৪২ বার পড়া হয়েছে