বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে ২৯ হাজার কোটি টাকার দেনা পরিশোধ

রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫ ১০:১৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বৈদেশিক দেনা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার সময় এ খাতে মোট দেনা ছিল প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকা, যা এখন নেমে এসেছে ১০ হাজার কোটি টাকায়। অর্থাৎ, অন্তর্বর্তী সরকার এ পর্যন্ত ২৯ হাজার কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ করেছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান কালবেলাকে জানান, সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় এ খাতে মোট বৈদেশিক দেনা ছিল ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ১২১ টাকা) অনুযায়ী প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকা। এখন এই অঙ্ক কমে দাঁড়িয়েছে ৮২৯ মিলিয়ন ডলারে, যা প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এ বছরের মধ্যেই বাকি দেনা পরিশোধের পরিকল্পনা রয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমান বকেয়ার মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে রয়েছে ৫২৯ মিলিয়ন ডলার এবং জ্বালানি খাতে ৩০০ মিলিয়ন ডলার। বিদ্যুৎ খাতের বকেয়ার মধ্যে ভারতের কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিল এবং কয়লার বিল উল্লেখযোগ্য। অন্যদিকে, জ্বালানি খাতের অধিকাংশ বকেয়া এলএনজি আমদানির বিল।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৯৬টি এলএনজি কার্গো আমদানির পরিকল্পনা করেছে সরকার, যার আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এ সংখ্যা বাড়িয়ে ১১৫টি কার্গো করার সম্ভাবনা রয়েছে, যার সম্ভাব্য ব্যয় দাঁড়াবে ৬৭ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা। গড়ে প্রতি কার্গো এলএনজির খরচ হবে প্রায় ৫৮৭ কোটি টাকা।
ইএমআরডি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, সরকার এলএনজি আমদানির জন্য জ্বালানি ভর্তুকি হিসেবে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে। সামান্য শুল্ক সমন্বয়ের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে আরও বেশি গ্যাস আমদানি সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিদ্যুৎ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বৈদেশিক বকেয়া পরিশোধের জন্য ৬০ দিনের একটি চক্র চালু করা হয়েছে। তিনি আশা করেন, সরকার নির্ধারিত সময়সীমা অনুযায়ী ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সব বকেয়া পরিশোধে সক্ষম হবে।
উল্লেখ্য, দেশীয় গ্যাসের রিজার্ভ হ্রাস পাওয়ায় বাংলাদেশ বর্তমানে গ্যাস-টু-গ্যাস (জিটুজি) ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত বাজার থেকে এলএনজি আমদানি করছে। বর্তমানে ইউনিটপ্রতি এলএনজির খরচ ৭০ টাকা হলেও দেশীয় গ্যাসের সঙ্গে মিশিয়ে তা গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে ৩০ টাকায়।
এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) আগামী জুন মাসে পরবর্তী পর্যালোচনা বৈঠকের আগে সরকারকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দেনা পরিশোধের একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সেই পরিকল্পনা তৈরি কার্যক্রম চলছে।
১১৩ বার পড়া হয়েছে