অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রবর্তনের সুপারিশ নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের

রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫ ৭:১২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ এবং সমতা নিশ্চিত করতে ঐচ্ছিকভাবে হলেও অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রবর্তনের সুপারিশ করেছে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন।
কমিশনের মতে, বর্তমানে বিদ্যমান ধর্মভিত্তিক পারিবারিক আইনসমূহে নারীরা ব্যাপকভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
শনিবার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সুপারিশ তুলে ধরেন কমিশন প্রধান শিরিন পারভিন হকসহ অন্যান্য সদস্যরা।
এ সময় বক্তারা বলেন, ব্যক্তিগত বা পারিবারিক আইন ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ার ফলে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রশ্রয় পেয়েছে। এই ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে একীভূত ও সমতা-ভিত্তিক একটি আইন চালু করা জরুরি।
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি)-এর সিনিয়র ফেলো মাহিন সুলতান বলেন, “অভিন্ন পারিবারিক আইন একটি পুরনো এবং যৌক্তিক দাবি। জাতীয় মহিলা পরিষদও এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। কিন্তু এতদিন কেউ গুরুত্ব দেয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “বিয়ে, ভরণপোষণ, সন্তানের অধিকার ও অভিভাবকত্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে একক আইনের আওতায় না আনলে নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করা যাবে না। এই আইন শুরুতে ঐচ্ছিক হলেও ভবিষ্যতে বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে, যাতে সকল নাগরিক সমান আইনি সুবিধা পান।”
কমিশন প্রধান শিরিন পারভিন হক বলেন, “বর্তমানে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধ—সব ধর্মেই আলাদা পারিবারিক আইন বিদ্যমান। কেউ যদি ধর্মীয় বিধানের বাইরে গিয়ে বিয়ে করতে চান, তাহলে সিভিল আইনের সুযোগ থাকা উচিত। এমনকি যারা ধর্মে বিশ্বাসী নন, তাদের জন্যও বিকল্প পথ থাকা দরকার।”
তিনি আরও জানান, “১৯৬১ সালে প্রণীত এই পারিবারিক আইন দীর্ঘদিন ধরেই অপরিবর্তিত রয়েছে। সময় এসেছে এটি সংস্কারের।”
কমিশনের মতে, আইনটি রাতারাতি পরিবর্তন সম্ভব না হলেও, প্রাথমিকভাবে ঐচ্ছিক অভিন্ন পারিবারিক আইন চালু করা হলে ধীরে ধীরে এটি সর্বজনীন ও বাধ্যতামূলক আকার নিতে পারে।
১১৮ বার পড়া হয়েছে