সর্বশেষ

অর্থনীতি

অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও তৈরি পোশাক খাতে নতুন বিনিয়োগ

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫ ৪:২৮ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
অর্থনৈতিক সংকট, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মতো নানা চ্যালেঞ্জের মাঝেও দেশের রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাতে আসছে নতুন বিনিয়োগ।

এতে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ। তবে একই সঙ্গে অনেক কারখানা বন্ধও হয়ে যাচ্ছে, যা উদ্বেগজনক।

তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ১৫ মাসে সংগঠনে নতুন সদস্য হয়েছে ১২৮টি কারখানা। এসব কারখানা পূর্ণ উৎপাদনে গেলে প্রায় ৭৪ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে একই সময়ে বন্ধ হয়ে গেছে ১১৩টি পোশাক কারখানা, যার ফলে চাকরি হারিয়েছেন ৯৬ হাজার ১০৪ জন শ্রমিক। এদের মধ্যে শুধু গত আগস্ট থেকে মার্চ পর্যন্ত ৬৯টি কারখানা বন্ধ হয়েছে, যাতে কাজ হারিয়েছেন ৭৬ হাজার ৫০৪ জন।

তবে কারখানা খোলা ও বন্ধের এই মিশ্র প্রবণতার মধ্যেও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ২৫ কোটি মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০.৮৪ শতাংশ বেশি।

নতুন উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসা
নতুন কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে একেএইচ আউটওয়্যার, এ জেড কম্পোজিট, নেক্সটন, এলএসএ অ্যাপারেলস, সুপ্রিম আউটফিট ও স্প্যারো গ্রিনটেক। এদের মধ্যে ১৮টি কারখানায় এক হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করবেন। অর্থাৎ বেশিরভাগই ক্ষুদ্র ও মাঝারি মানের উদ্যোগ।

গাজীপুরে অবস্থিত এ জেড কম্পোজিট বর্তমানে পরীক্ষামূলক উৎপাদন চালাচ্ছে। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল হাসান জানান, ‘ঈদুল আজহার পর পুরোদমে উৎপাদনে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তখন কর্মীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৭০০ থেকে ৮০০।’

স্প্যারো গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ গত বছর গাজীপুরে চালু করেছে নতুন কারখানা ‘স্প্যারো গ্রিনটেক’। সেখানে ইতোমধ্যে ১,৮০০ শ্রমিক কাজ করছেন। গ্রুপটির মোট চারটি কারখানায় কর্মসংস্থান হয়েছে ১৮ হাজার শ্রমিকের। প্রতিষ্ঠানটি গত বছর ৩০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে।

অনিশ্চয়তা ও চ্যালেঞ্জ
তবে বাজার পরিস্থিতি অনিশ্চিত। স্প্যারো গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শোভন ইসলাম জানান, ‘নতুন কারখানাটি ভালো করছিল, কিন্তু শরৎ মৌসুমের অর্ডার কিছুটা কমে গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের কারণে কিছুটা অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।’

এছাড়া বিজিএমইএর প্রাক্তন পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল জানান, বড় ও মাঝারি কারখানাগুলো প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াচ্ছে। তবে বাড়তি খরচে ছোট কারখানাগুলো টিকে থাকতে পারছে না।

বেক্সিমকো গ্রুপের ২৪টি, কেয়া গ্রুপের ৪টি ও টিএনজেড-এর ৪টি সহ বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে বেক্সিমকো শিল্পপার্কের ১৪টি কারখানা বন্ধ হয় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি। এসব কারখানায় কাজ করতেন ৩১ হাজার ৬৭৯ শ্রমিক ও ১,৫৬৫ জন কর্মচারী। সরকার থেকে এই শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে দেওয়া হয় ৫২৫ কোটি টাকা, যদিও অনেকেই এখনো সম্পূর্ণ পাওনা পাননি।

বিজিএমইএর সাবেক সহসভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘কারখানা খোলা ও বন্ধ হওয়া একটি চলমান প্রক্রিয়া। রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক অনিশ্চয়তা থাকায় বিনিয়োগকারীরা কিছুটা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। তবে যাঁরা ইতোমধ্যে যন্ত্রপাতির ঋণপত্র খুলেছেন, তাঁরা দেরি করবেন না।’

১১৩ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
অর্থনীতি নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন