সর্বশেষ

সারাদেশ

চট্টগ্রামে নালায় পড়ে শিশুর মৃত্যু: ১৪ ঘণ্টা পর মরদেহ উদ্ধার

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫ ৯:২৪ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজারের কাপাসগোলা এলাকায় অরক্ষিত নালায় পড়ে নিখোঁজ হওয়া ছয় মাস বয়সী শিশু সেহেরিজের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর।

শুক্রবার রাত ৮টার দিকে তার মা ও দাদির সঙ্গে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চড়ে আত্মীয়ের বাসা থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনাটি ঘটে। রাস্তায় জলাবদ্ধতার কারণে খাল আর সড়কের পার্থক্য বোঝা না যাওয়ায় অটোরিকশাটি সরাসরি নালায় পড়ে যায়। স্থানীয়রা শিশুটির মা সালমা বেগম ও দাদি আয়েশাকে উদ্ধার করতে পারলেও শিশুটিকে তখন খুঁজে পাওয়া যায়নি।

দীর্ঘ সময় উদ্ধার অভিযান চালানোর পর শনিবার সকাল ১০টার দিকে উদ্ধারকর্মীরা সেহেরিজের নিথর দেহ খাল থেকে উদ্ধার করে।

শিশুটির মামা মারুফ জানান, তারা আসাদগঞ্জ থেকে তার বাসায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে নিরাপত্তা ব্যারিকেড না থাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি অভিযোগ করেন, "নালার পাশে আগে একটি বাঁশের ব্যারিকেড ছিল। কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের খাল পরিষ্কারের কাজের সময় সেটা তুলে ফেলা হয়।"

এলাকাবাসীর অভিযোগ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) অব্যবস্থাপনা ও খেয়ালহীনতার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারা জানান, সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় পানি জমে নালা ঢেকে যায়, ফলে পথচারীরা কিংবা যানবাহন চালকরা বুঝে উঠতে পারেন না কোথায় রাস্তা, কোথায় খাল।

ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে ছুটে যান চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি উদ্ধার কার্যক্রমে নিযুক্ত দলকে পুরস্কার হিসেবে ৫০ হাজার টাকা ঘোষণা করেন এবং প্রতিশ্রুতি দেন—অরক্ষিত নালাগুলোর পাশে দ্রুত নিরাপত্তা ব্যারিকেড বসানো হবে।

চট্টগ্রামে এই ধরনের দুর্ঘটনা নতুন নয়। প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে এমন ঘটনা ঘটে, তবুও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ২০২১ সালের আগস্টে মুরাদপুরে খোলা নালায় পড়ে নিখোঁজ হন এক সবজি বিক্রেতা; পরবর্তীতে তার মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি। একই বছরের সেপ্টেম্বরে আগ্রাবাদে মারা যান এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী। এরপর ২০২২, ২০২৩ এবং ২০২৪ সালেও শিশুসহ একাধিক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন নগরের বিভিন্ন নালায়।

স্থানীয় দোকানদার আবুল ফজল জানান, ঘটনাস্থলের খালটি 'হিজড়া খাল' নামে পরিচিত, যেখানে নিয়মিত আবর্জনা জমে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।

এদিকে ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ শিশুটির পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ভেঙে পড়েছেন মা সালমা বেগম। তিনি বলেন, "আমার চোখের সামনেই সন্তানটা স্রোতে ভেসে গেল। কিছুই করতে পারিনি।"

এই মর্মান্তিক ঘটনা নতুন করে নগরীর ড্রেনেজ ও সড়ক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।

১২২ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন