সর্বশেষ

অর্থনীতি

শেয়ারবাজারে টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মাথায় হাত

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫ ৬:২২ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
গত সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই দেখা গেছে ধারাবাহিক দরপতন।

এতে বাজারে অংশ নেওয়া অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে, সূচকে নেমে এসেছে বড় ধরনের ধস, আর বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিওতে যোগ হয়েছে নতুন হতাশা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে মাত্র ৭৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, যেখানে ২৯৯টি কোম্পানির দর কমেছে। বাকি ১৭টির দর অপরিবর্তিত ছিল। অর্থাৎ মোট লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭৬ শতাংশেরই শেয়ারদর পড়েছে নিচের দিকে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সপ্তাহ শুরুর আগে থেকেই বাজারে একটি গুঞ্জন ছিল—শিল্পখাতে গ্যাসের দাম বাড়তে পারে। সেই গুঞ্জন সত্যি হয় রোববার লেনদেন শেষে, যখন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) শিল্প ও ক্যাপটিভ গ্যাস সংযোগে ৩৩ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দেয়। এ খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে।

এর প্রভাব বাজারে স্পষ্ট। রোববার থেকে শুরু হয়ে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত (বৃহস্পতিবার) প্রতিদিনই বড় পরিসরে শেয়ারের দরপতন হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বাজার বন্ধ থাকলেও মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার ছিল টানা নিম্নমুখী লেনদেন।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহ শেষে বাজারের মোট মূলধন দাঁড়ায় ৬ লাখ ৭০ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকায়, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৬ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা। ফলে সপ্তাহজুড়ে বাজার মূলধন কমেছে ১ হাজার ১০৭ কোটি টাকা বা ০.১৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহেও মূলধন কমেছিল ২ হাজার ২২৩ কোটি টাকা। দুই সপ্তাহ মিলিয়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৩৩০ কোটি টাকার।

মূলধনের পাশাপাশি বড় ধস নেমেছে সূচকেও। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সপ্তাহজুড়ে কমেছে ১০৭.৯০ পয়েন্ট বা ২.০৭ শতাংশ। একইভাবে, ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমেছে ২৯.২৫ পয়েন্ট বা ২.৪৯ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ৫২.৫১ পয়েন্ট বা ২.৭২ শতাংশ।

লেনদেনের দিক থেকেও দেখা গেছে নিম্নগতি। প্রতিদিন গড়ে ৩৯৯ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের গড় ৪৮৭ কোটি ২৭ লাখ টাকার চেয়ে ৮৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা কম। শতাংশের হিসাবে কমেছে ১৮.১১ ভাগ।

সপ্তাহজুড়ে সর্বাধিক লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, যার শেয়ারে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এরপর রয়েছে বিচ হ্যাচারি (১৭ কোটি ১২ লাখ টাকা) এবং বেক্সিমকো ফার্মা (১১ কোটি ৬ লাখ টাকা)।

শীর্ষ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকায় আরও রয়েছে: উত্তরা ব্যাংক, এসিআই লিমিটেড, শাহিনপুকুর সিরামিকস, ইস্টার্ণ লুব্রিকেন্ট, এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ম্যারিকো বাংলাদেশ এবং মিডল্যান্ড ব্যাংক।

বিশ্লেষকদের মতে, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব ছাড়াও বাজারে আস্থাহীনতা, আর্থিক খাতের দুর্বলতা এবং নীতিনির্ধারকদের নিরুত্তর অবস্থান বাজারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

১০৬ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
অর্থনীতি নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন