১০ দফা দাবিতে পহেলা মে থেকে সারা দেশে ডিম-মুরগির খামার বন্ধ

বৃহস্পতিবার , ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ ৭:৫৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
প্রান্তিক ডিম ও মুরগি খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) আগামী পহেলা মে থেকে দেশব্যাপী সব খামার বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এ ঘোষণা দেয়।
বিবৃতিতে বিপিএ সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, চলতি বছরের মার্চ ও এপ্রিল মাসে প্রান্তিক খামারিরা প্রায় ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকার লোকসান গুনেছেন। রমজান ও ঈদ মৌসুমেও প্রতিদিন প্রায় ২০ লাখ কেজি মুরগি উৎপাদন করেও প্রতি কেজিতে ৩০ টাকা করে লোকসান গুনতে হয়েছে, যার আর্থিক ক্ষতি দাঁড়ায় প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। একই সময়, দৈনিক ৪ কোটি ডিমের মধ্যে ৩ কোটি ডিম উৎপাদন করেছেন প্রান্তিক খামারিরা। এতে প্রতি ডিমে ২ টাকা করে লোকসান, দুই মাসে ডিম খাতে ক্ষতি হয়েছে ৩৬০ কোটি টাকা।
সুমন হাওলাদার অভিযোগ করেন, সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নীরবতায় কিছু কর্পোরেট কোম্পানি পুরো পোল্ট্রি শিল্প দখলের চেষ্টা করছে। তারা শুধুমাত্র ফিড, বাচ্চা ও ওষুধ সরবরাহই নয়, ডিম ও মুরগির বাজারও নিয়ন্ত্রণ করছে। বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রান্তিক খামারিদের ‘কন্ট্রাক্ট ফার্মিং’-এর দাসত্বে ঠেলে দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা কর্পোরেট দাসত্ব মানব না। সরকার যদি সিন্ডিকেট ভাঙতে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে খামার বন্ধ রাখার কর্মসূচি চলতেই থাকবে।”
বিপিএ সভাপতির দাবি, কর্পোরেট কোম্পানিগুলো উৎপাদিত বাচ্চা ২৮–৩০ টাকা খরচে তৈরি করে ৭০–৮০ টাকায় বিক্রি করেছে ঈদের আগে। এখন সেই বাচ্চার দাম নেমে এসেছে ৩০–৩৫ টাকায়। ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৬০–১৭০ টাকা, কিন্তু বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১২০–১২৫ টাকায়। ডিমের ক্ষেত্রেও উৎপাদন খরচ ১০–১০.৫০ টাকা, অথচ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮–৮.৫০ টাকায়। এই অবস্থায় প্রান্তিক খামারিদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বিপিএ ১০ দফা দাবি তুলে ধরেছে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১. জাতীয় মূল্যনিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ও নির্ধারণ কমিটি গঠন
২. কন্ট্রাক্ট ফার্মিং নিষিদ্ধ করতে আইন প্রণয়ন
৩. পোল্ট্রি বাজার রেগুলেটরি অথরিটি গঠন
৪. ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য পুনর্বাসন প্যাকেজ
৫. খামারিদের নিবন্ধন ও আইডি কার্ড প্রদান
৬. কোম্পানিকে কেবল কাঁচামাল উৎপাদনে সীমাবদ্ধ রাখা
৭. কন্ট্রাক্ট ফার্মিং ও কোম্পানির খামার নিষিদ্ধ করা
৮. কেজি ভিত্তিক ডিম ও মুরগি বিক্রির নীতিমালা প্রণয়ন
৯. ডিম-মুরগি রপ্তানির সুযোগ বৃদ্ধি
১০. একটি পূর্ণাঙ্গ ‘পোল্ট্রি উন্নয়ন বোর্ড’ গঠন
সংগঠনটি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, সরকার দাবি মানা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে।
১৪৭ বার পড়া হয়েছে