গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা অব্যাহত রাখার ঘোষণা ইসরাইলের

বৃহস্পতিবার , ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ ৩:৪৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ইসরাইল গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গালান্ট কাটজ। চলমান বিমান ও স্থল হামলার মধ্যেই বুধবার তিনি এ ঘোষণা দেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এএফপি ও আলজাজিরা জানায়, ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় বলেন, "ইসরাইলের নীতি একটাই—হামাসকে দুর্বল করতে গাজায় কোনো ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।"
গত ২ মার্চ থেকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ রয়েছে, ফলে সেখানে চরম মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। কাটজ আরও জানান, বর্তমানে কেউ গাজায় ত্রাণ পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা করছে না এবং এ বিষয়ে কোনো প্রস্তুতিও নেই।
এর আগের দিন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও অন্যান্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাজায় আটক ৫৮ জন ইসরাইলি জিম্মির মুক্তির একমাত্র উপায় হচ্ছে সামরিক চাপ অব্যাহত রাখা। উত্তর গাজায় সেনাদের উদ্দেশে নেতানিয়াহু বলেন, “হামাস একের পর এক আঘাত খেয়ে যাবে। আমাদের জিম্মিদের মুক্তি না দিলে আমরা আরও কঠোর ব্যবস্থা নেব।”
এদিকে, জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজা বর্তমানে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকটে পড়েছে। জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) জানায়, গত দেড় মাসে গাজায় কোনো ধরনের ত্রাণ সরবরাহ পৌঁছায়নি। সেখানে ওষুধ, পানি, জ্বালানি এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলমান হামলায় এখন পর্যন্ত ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত ও এক লাখ ১৬ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানায়, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ জনের বেশি, কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া ব্যক্তিদেরও এতে ধরা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে হামলা চালিয়ে ১১৩৯ জনকে হত্যা করে এবং দুই শতাধিক ইসরাইলিকে বন্দি করে। পরে যুদ্ধবিরতির আওতায় কিছু বন্দি বিনিময় হলেও ১৮ মার্চ ইসরাইল যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবার হামলা শুরু করে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে হামাস একটি "গুরুতর ও স্থায়ী" যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তার বিনিময়ে ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তি দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।
ইতোমধ্যে ইসরাইল হামাসকে একটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে—হামাস ১০ জন জীবিত বন্দিকে মুক্তি দেবে এবং যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপে আলোচনা শুরু করতে ইসরাইলের পক্ষে গ্যারান্টি দেবে। এই আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে মিসর ও কাতার, যারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একত্রে একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
১২০ বার পড়া হয়েছে