সাতক্ষীরায় বাণিজ্যিকভাবে বাড়ছে তরমুজ চাষ, লাভ হওয়ায় খুশি কৃষক

মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫ ৫:৩০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
উৎপাদন খরচ তুলনামূলক কম, আবার লাভও চোখে পড়ার মতো—এই দুই কারণেই সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকা আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তরমুজ চাষ।
জেলার উপযোগী মাটি ও আবহাওয়ার কারণে সম্প্রতি কৃষকরা বিপুল আগ্রহে ঝুঁকছেন এ চাষের দিকে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে সাতক্ষীরা জেলায় তরমুজ চাষ হয়েছিল ৩১৫ হেক্টর জমিতে। আর ২০২৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১৮ হেক্টরে, যা দ্বিগুণেরও বেশি। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, অল্প সময় ও পরিশ্রমে ভালো ফলন এবং বাজারে চড়া দামের কারণেই তরমুজ চাষ এখন বাণিজ্যিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
আশাশুনি উপজেলার চাষি আফসার গাজী, মানবেন্দ্র ঢালী ও মাখন লাল ঢালী জানান, পুকুরের পানি সেচ দিয়ে আশপাশের পতিত জমিতে তরমুজের আবাদ করছেন তাঁরা। আগে যেখানে জমি অনাবাদী পড়ে থাকত, এখন সেখান থেকে আসছে ভালো মানের তরমুজ, যা প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাঁদের মতে, তরমুজের সাইজ ও স্বাদ চাহিদামতো হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
শুধু কৃষকই নন, এই তরমুজ চাষ কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি করছে। মাঠে কাজ করা শ্রমিক শিফালী মন্ডল ও নিতাই রায় জানান, তরমুজ তুলার মৌসুমে তাঁরা দৈনিক ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত মজুরি পাচ্ছেন। চাষের সময় এই মজুরি ছিল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। এতে তাঁদের পরিবারেও এসেছে আর্থিক স্বচ্ছলতা।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “অল্প সময়ে বেশি লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা তরমুজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। বিশেষ করে পতিত জমি কাজে লাগিয়ে চাষের আওতা বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আরও প্রসারিত হবে।”
তবে স্থানীয়দের দাবি, তরমুজের স্থায়ী বাজার ও সরকারি প্রক্রিয়াজাতকরণ সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে চাষ আরও বাণিজ্যিক রূপ পাবে এবং কৃষকরা পাবে ন্যায্যমূল্য ও টেকসই আয়।
১১৬ বার পড়া হয়েছে