চীনের বিরল খনিজ ও চুম্বক রপ্তানি বন্ধ: বিশ্বজুড়ে শিল্প খাতে শঙ্কা

মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫ ৫:২৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। এরই মধ্যে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বিরল খনিজ ও চুম্বক রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে বেইজিং।
এতে বৈশ্বিক শিল্প খাতে সরবরাহ সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স’-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সম্প্রতি চীনের শীর্ষ পর্যায়ে এ নিয়ে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রপ্তানি বিধিনিষেধের একটি নতুন খসড়া তৈরি করেছে চীন সরকার, যার আওতায় পড়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিরল খনিজ ও চুম্বক।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের এমন সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বৈশ্বিক গাড়ি শিল্প, অ্যারোস্পেস কোম্পানি, সেমিকন্ডাকটর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং সামরিক কন্ট্রাক্টররা। কারণ, এসব খাতের উৎপাদনে বিরল খনিজ ও চুম্বক অপরিহার্য উপাদান।
চীন ইতোমধ্যে বিভিন্ন বন্দরে এসব উপাদানের চালান আটকে দিয়েছে। পাশাপাশি ছয় ধরনের ভারী ক্ষারমৃত্তিকা ও চুম্বকের রপ্তানিতে বিশেষ লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করেছে। বর্তমানে এই উপাদানগুলোর ৯০ শতাংশই চীনে উৎপাদিত হয় এবং রপ্তানির পরিশোধন প্রক্রিয়াও মূলত সেখানেই সম্পন্ন হয়।
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে এই ধরনের উপাদান আমদানি করে, যার অধিকাংশই আসে চীন থেকে। ফলে, রপ্তানি বন্ধ থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প খাতে ব্যাপক সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চীনের এই পদক্ষেপ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের জবাব হিসেবেই দেখা হচ্ছে। গত ২ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্র নতুন শুল্ক কার্যকর করে, যার প্রতিক্রিয়ায় চীন গত ৪ এপ্রিল রপ্তানি বিধিনিষেধ জারি করে।
বর্তমানে এই উপাদানগুলোর রপ্তানি কেবলমাত্র বিশেষ রপ্তানি লাইসেন্সের আওতায় অনুমোদিত। তবে চীন এখনও লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়া পুরোপুরি শুরু না করায় সংশ্লিষ্ট শিল্প খাতের নেতারা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই নমনীয় মনোভাব দেখাচ্ছে না, যার ফলে বাণিজ্য যুদ্ধ আরও জটিল রূপ নিতে পারে।
১০৮ বার পড়া হয়েছে