সাঙ্গু নদীতে ফুল ভাসিয়ে শুরু হলো পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বিজু উৎসব

শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫ ৫:২৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ফুল দিয়ে জলবুদ্ধ ও মা গঙ্গাদেবীর উদ্দেশে পূজা ও ক্ষমা প্রার্থনার মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম বৃহৎ সামাজিক উৎসব বিজু-বৈসু-বিষু-এর সূচনা হয়েছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে বান্দরবানের সাঙ্গু নদীর তীরে ঐতিহ্যবাহী ফুলবিজু পালন করেন চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের লোকজন।
ভোর থেকেই নারী, পুরুষ ও শিশুরা রঙিন ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে, কলাপাতায় সাজানো ফুল নিয়ে নদীর তীরে সমবেত হন। মোমবাতি জ্বালিয়ে ও ফুল অর্পণের মাধ্যমে অতীতের সব ভুলভ্রান্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন তারা। প্রার্থনায় উঠে আসে শান্তি, সমৃদ্ধি ও ভবিষ্যতের সুন্দর জীবনের আকাঙ্ক্ষা।
সিদ্ধার্থ চাকমা বলেন, "আমরা অতীতের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে জলবুদ্ধ ও মা গঙ্গাদেবীর কাছে প্রার্থনা করি, যেন আগামী বছর সুখ ও শান্তিতে কাটে।"
মিনতি চাকমা জানান, "ভোরে ফুল সংগ্রহ করে নদীতে গিয়ে ফুল নিবেদন করেছি। এতে অতীতের ভুল মুছে গিয়ে আগামীর দিনগুলো মঙ্গলময় হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।"
নাজিব তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, "চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের মানুষজন প্রতিবছরই এভাবেই সাঙ্গু নদীতে ফুল বিজু উদযাপন করেন। এটি আমাদের ঐতিহ্য এবং আত্মিক শান্তির উৎস।"
পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা—বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে বসবাসরত ১১টি জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বিজু-বৈসু-বিষু অন্যতম বৃহৎ সামাজিক উৎসব। উৎসব ঘিরে পাহাড়ি জনপদে বইছে উৎসবমুখর আমেজ।
উৎসবসূচি:
বিজু-বৈসু-বিষু উপলক্ষে বান্দরবানে আয়োজিত হয়েছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান।
১২ এপ্রিল: বিকেল ৫টা থেকে রেইচা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ঘিলা খেলা টুর্নামেন্ট
১৩ এপ্রিল: সাংগ্রাইং র্যালি ও বয়স্ক পূজা
১৪ এপ্রিল: বৌদ্ধ বিহারে বুদ্ধ মূর্তি স্নান, রাতে পিঠা তৈরি
১৫ এপ্রিল: রাজার মাঠে ঐতিহ্যবাহী বলি খেলা
১৬-১৮ এপ্রিল: মারমা সম্প্রদায়ের রিলংবোই বা মৈত্রি পানি বর্ষণ খেলা
বান্দরবানের সাতটি উপজেলার গ্রাম ও ইউনিয়নজুড়ে সপ্তাহজুড়ে নানা সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে মুখর থাকবে পার্বত্য চট্টগ্রাম।
২১৮ বার পড়া হয়েছে