সর্বশেষ

সারাদেশ

আমের জেলা নওগাঁয় বৃষ্টি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় আমচাষিরা

মামুনুর রশীদ বাবু, নওগাঁ
মামুনুর রশীদ বাবু, নওগাঁ

বৃহস্পতিবার , ১০ এপ্রিল, ২০২৫ ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
নওগাঁ, দেশের অন্যতম প্রধান আম উৎপাদনকারী জেলা, যেখানে গত কয়েক বছরের মধ্যে এবার আমের মুকুলের আগমন সবচেয়ে বেশি হয়েছে। গুটি গুটি আমের মিষ্টি গন্ধ এখন নওগাঁর বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে।

মার্চ মাসের বেশিরভাগ সময় আবহাওয়া আমের জন্য উপযোগী ছিল, তবে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও বৃষ্টি না হওয়ায় চাষিরা কিছুটা চিন্তিত। তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের মতে, চলতি মাসে বৃষ্টি না হলেও আম উৎপাদনে কোনো সমস্যা হবে না।

কৃষিবিদরা জানাচ্ছেন, এ পর্যন্ত আবহাওয়া আমের চাষের জন্য অনুকূল ছিল। কোনো বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার আমের বড় ফলন হবে। এবার গত বছরের তুলনায় ২০০ হেক্টর বেশি জমিতে আমের বাগান হয়েছে। ফলে, ২৫ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত ফলন আশা করা হচ্ছে।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ৩০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হচ্ছে, যা গত বছর ছিল ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর। গত বছর ৪ লাখ ৩১ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও উৎপাদন হয়েছিল ৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। এবার ৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নওগাঁর সাপাহার ও পোরশা উপজেলার মতো এলাকাগুলিতে সবচেয়ে বেশি আম চাষ হয়। এছাড়া নিয়ামতপুর, পত্নীতলা, ধামইরহাট, এবং বদলগাছি উপজেলায়ও আমের চাষ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হয়ে থাকে।

এছাড়া, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, নওগাঁতে নাগ ফজলি, ল্যাংড়া, আম রুপালি, গোপালভোগ, আশ্বিনা, কাটিমন, বারি আম-৪, বারি আম-১১, গুটি আম, ও ফজলি জাতের সুস্বাদু আম উৎপাদন বেশি হয়ে থাকে।

সাপাহার উপজেলার গোডাউনপাড়া এলাকায় তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা সোহেল রানার তিনটি আমবাগান রয়েছে। তিনি স্থানীয় বাজারে আম বিক্রি ছাড়াও বিদেশেও আম রপ্তানি করেন। সোহেল রানার মতে, তার বাগানে গত বছর ৫০-৬০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছিল, তবে এবার প্রায় ৮০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছে। তিনি জানান, দীর্ঘ খরায় সেচ সুবিধা থাকা বাগানগুলোতে সেচ দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু তাপমাত্রা বেশি থাকায় গুটি ঝরা আশঙ্কা বাড়ছে। যদি বৃষ্টি না হয়, তবে ঝরা আরও বাড়বে এবং উৎপাদন খরচও বাড়বে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, গত বছরের মার্চে বৃষ্টি ছিল না, এবং এপ্রিল মাসে মাত্র ১১.৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। তিনি মনে করেন, মার্চ মাসের আবহাওয়া কারণে আমের গুটি ভালোভাবে সেট হয়ে গেছে। চলতি বছরও আমের গুটি থেকে ৩০-৪০ শতাংশ গুটি স্বাভাবিকভাবে ঝরে পড়বে, তাই উৎপাদনে কোনো সমস্যা হবে না। তবে, মাটির আদ্রতা কমে গেলে আমচাষিদের সেচ দেওয়া, গাছের পানি স্প্রে করা এবং মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এছাড়া, কৃষি কর্মকর্তারা আশা করছেন যে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে নওগাঁ থেকে ৪.৫ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হবে এবং বাজার ভালো থাকলে এবছর নওগাঁ জেলায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার আম উৎপাদন হতে পারে।

১৪১ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ সব খবর
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন