আফগান শরণার্থীদের ফেরত পাঠাচ্ছে পাকিস্তান, ইসলামাবাদ-কাবুল সম্পর্ক উত্তপ্ত

বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫ ৯:১৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
পাকিস্তান সরকার অবৈধভাবে অবস্থানরত আফগান নাগরিকদের দেশত্যাগের জন্য নির্ধারিত ৩১ মার্চের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পর ফেরত পাঠানোর অভিযান জোরদার করেছে।
অভিযোগ উঠেছে, অনেক আফগান শরণার্থীকে বলপ্রয়োগ করে সীমান্ত পার করানো হচ্ছে।
পাকিস্তানের দাবি, ২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসার পর প্রায় ৩০ লাখ আফগান নাগরিক পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ২০২৩ সাল থেকে এই শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে ইসলামাবাদ। নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, যেসব আফগান শরণার্থীদের ‘আফগান সিটিজেন কার্ড’ (এএসসি) রয়েছে, তাদেরও দেশ ছাড়তে বলা হয়েছে। এমন কার্ডধারী মানুষের সংখ্যা প্রায় আট লাখ।
পাকিস্তান প্রশাসনের হুঁশিয়ারি—এই ব্যক্তিরা স্বেচ্ছায় দেশ না ছাড়লে তাদের জোরপূর্বক ডিপোর্ট করা হবে। ইতিমধ্যে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, গত নয় দিনে পাকিস্তান অন্তত ৮,৯০৬ জন আফগান নাগরিককে আফগানিস্তানে ফেরত পাঠিয়েছে।
শরণার্থীদের অভিযোগ, পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী অনেকের বাড়ি ঘিরে ফেলে তাদের তাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেওয়ার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে না। ফলে অনেককেই এক কাপড়ে ঘর ছাড়তে হচ্ছে।
প্রায় দেড় বছরের অভিযানে পাকিস্তান ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন অন্তত ৮ লাখ ৪৫ হাজার আফগান। তালেবান সরকার পাকিস্তানের এ পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছে। তাদের অভিযোগ, শরণার্থীদের অর্থ ও সম্পত্তি সঙ্গে নেওয়ার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে না, যা মানবাধিকারের পরিপন্থী।
অন্যদিকে, ইসলামাবাদ অভিযোগ করেছে, আফগানিস্তানের তালেবান সরকার তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-কে মদত দিচ্ছে। এই গোষ্ঠী পাকিস্তানে একের পর এক জঙ্গি হামলার সঙ্গে জড়িত। ইসলামাবাদের দাবি, তালেবানদের হাতে এখন আর টিটিপির ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
চলমান সংকটের ফলে দুই দেশের সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও মানবিক অবস্থা—উভয়ের জন্যই উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে।
১৩৫ বার পড়া হয়েছে