শিন বেত প্রধান বরখাস্তে আদালতের স্থগিতাদেশ ‘অগ্রহণযোগ্য’: নেতানিয়াহু

বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫ ৯:১৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দেশটির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্তের সিদ্ধান্তে ইসরাইলের সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ ও ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার ইসরাইলের হাই কোর্ট অব জাস্টিস রোনেন বারকে বরখাস্তের সিদ্ধান্তে ১০ দিনের জন্য স্থগিতাদেশ জারি করে। এরপর এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানায়, “আলোচনার সময় বিচারপতিরা বারবার বলেছেন যে, শিন বেত প্রধানকে অপসারণের ক্ষমতা সরকারের আছে—এই বিষয়ে কোনো বিতর্ক নেই। তাই আদালতের এমন সিদ্ধান্ত বিরক্তিকর ও অবাক করার মতো।”
নেতানিয়াহু আরও বলেন, “শুধু একটি সম্পর্কহীন তদন্ত শুরু হয়েছে বলেই ব্যর্থ কোনো নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে বহাল রাখার পক্ষে রায় দেওয়া যায় না। এই ধরনের সিদ্ধান্ত ভয়ানক দৃষ্টান্ত তৈরি করবে। ভবিষ্যতে কোনো ব্যর্থ প্রধান একটি তদন্ত শুরু করলেই সরকারের হাতে তাকে বরখাস্ত করার সুযোগ থাকবে না।”
আদালতের এই রায় ইসরাইলি রাজনীতিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। একদিকে সরকারপন্থীরা একে আদালতের ‘ক্ষমতা বৃদ্ধি’ ও ‘গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি’ হিসেবে দেখছেন, অন্যদিকে বিরোধীরা আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর অবস্থানকে ‘গণতন্ত্রবিরোধী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করে আদালতের রায়কে ‘গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং তাৎক্ষণিক বিচারিক সংস্কারের দাবি জানান।
যোগাযোগমন্ত্রী শ্লোমো কারহি বলেন, “রোনেন বার নির্ধারিত সময়েই বিদায় নেবেন। বিচারপতি ইতজহাক আমিতের একক সিদ্ধান্তে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।”
ডায়াসপোরা বিষয়ক মন্ত্রী আমিখাই চিকলি বলেন, “আজকের রায় প্রমাণ করে দিয়েছে যে বহু ইসরাইলি ভুল করে ভাবতেন তারা একটি গণতান্ত্রিক দেশে বাস করছেন। এখন আদালত কার্যত সংসদ ও সরকারের ওপর অভিভাবকত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে।”
তবে সবাই নেতানিয়াহুর অবস্থানকে সমর্থন করেননি।
বিরোধীদলীয় এমকে নামা লাজিমি অভিযোগ করেন, “নেতানিয়াহু যুদ্ধাবস্থার সুযোগ নিয়ে একপ্রকার অভ্যুত্থানের চেষ্টা করছেন।”
ডেমোক্র্যাটস দলের চেয়ারম্যান ইয়াইর গোলান রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “সরকার যদি আদালতের রায় অমান্য করে, তবে গণতান্ত্রিক সংখ্যাগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে নজিরবিহীন নাগরিক আন্দোলন শুরু হবে।”
তিনি আরও বলেন, “যখন একজন প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের তদন্ত চলছে, তখন তিনি সেই তদন্তকারী সংস্থার প্রধানকে বরখাস্ত করতে পারেন না। বিশেষ করে যখন দেশ যুদ্ধরত অবস্থায় রয়েছে।”
সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গ্যান্টজও আদালতের রায় মানার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর মতে, “গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থেই আদালতের রায় মানা উচিত।”
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, শিন বেতের নতুন প্রধান নিয়োগে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন নেতানিয়াহু।
১৩৭ বার পড়া হয়েছে