সর্বশেষ

সারাদেশ

আলুর ন্যায্য মূল্য না পেয়ে গরুকে খাওয়াচ্ছেন কৃষকরা

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুর প্রতিনিধি

মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১০:৪২ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
আলুর ভালো ফলন হলেও বাজারে ন্যায্য দাম না মেলায় হতাশ রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কৃষকেরা গবাদিপশুকে আলু খাওয়াতে বাধ্য হচ্ছেন।

হিমাগারে জায়গার সংকট ও বাজারে ক্রেতার অভাবে উঠান ও ঘরে জমা রাখা আলু পঁচে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন তাঁরা।

তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী ইউনিয়নের প্রামাণিকপাড়া গ্রামের কৃষক আজারুল ইসলাম বলেন, “দেড় দোন জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। ফলন ভালো হয়েছে, কিন্তু বেচে উৎপাদন খরচের অর্ধেকও উঠছে না। হিমাগারে জায়গা না পেয়ে আলু ঘরেই রেখেছি, সেগুলো এখন পচে যাচ্ছে। তাই গরুকে খাওয়াচ্ছি।”

একই এলাকার কৃষক জিয়াউর রহমান জানান, তিনি বাড়িতে প্লাস্টিকের জালিতে প্রায় ৩০০ বস্তা আলু সংরক্ষণ করেছেন। তাঁর হিসাব অনুযায়ী প্রতি কেজি আলুতে খরচ পড়েছে ২২ টাকা, অথচ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকায়—প্রতি কেজিতে ১০ টাকা করে লোকসান।

তারাগঞ্জ উপজেলার আরও অনেক কৃষক একই দুর্দশায় পড়েছেন। কৃষকেরা জানান, উৎপাদিত আলুর তুলনায় হিমাগারের ধারণক্ষমতা অপ্রতুল হওয়ায় অধিকাংশ আলু ঘরে ও উঠানে সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। এতে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় আলু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর তারাগঞ্জে আলুর আবাদ বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ৫৩০ হেক্টরে, যেখানে গত বছর ছিল ৩ হাজার ১৫০ হেক্টর। উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৪২ হাজার ৯৫ মেট্রিক টন। অথচ উপজেলার মাত্র তিনটি হিমাগারে ধারণক্ষমতা মাত্র ১৬ হাজার টন।

প্রামাণিকপাড়া গ্রামের কৃষক তারাজুল ইসলাম বলেন, “এক কেজি চালের খুদের দাম ৪৫ টাকা, আর আলুর দাম মাত্র ১২ টাকা। তাই গরুকে খুদের বদলে আলু খাওয়াচ্ছি। শুধু আমি নই, যাদের বাড়িতে গরু আছে, সবাই একই কাজ করছে।”

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীবা রানী রায় বলেন, “গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় এবছর আলুর আবাদ বেড়েছে। কিন্তু হিমাগারের সংকট থাকায় অনেকেই আলু ঘরে রাখছেন। সংরক্ষণ সমস্যা থেকে উত্তরণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা জরুরি।”

আলুর ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত না হলে কৃষকেরা ভবিষ্যতে আলুর আবাদে অনাগ্রহী হয়ে পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

১৩২ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন