সর্বশেষ

অপরাধ

শীর্ষ তারকাদের অনলাইন জুয়ার প্রচারণা, আইনের আওতার বাইরে

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫ ৯:৩৬ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
বাংলাদেশে অনলাইন জুয়ার প্রসার বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। এর পেছনে বড় ভূমিকা রাখছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শোবিজ তারকারা ও ক্রীড়াবিদরা, যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় এই জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচারে অংশ নিচ্ছেন—সরাসরি ভক্ত ও অনুসারীদের টার্গেট করে।

মডেল ও আইনজীবী পিয়া জান্নাতুল, যিনি ফেসবুকে ১৭ লাখ এবং ইনস্টাগ্রামে ১১ লাখ অনুসারীর অধিকারী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত অন্তত ১২টি অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করেছেন ‘বাবু ৮৮’ এবং ‘ভাগ্য’ নামের প্রতিষ্ঠানের পক্ষে। তাঁর এই পোস্টগুলো সবই তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া হয়েছে।

শুধু পিয়াই নন, চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী, অভিনেত্রী সামিরা খান মাহি ও জনপ্রিয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ আরও অনেক তারকাই এসব প্রচারণায় জড়িত। সাকিব, যার অনুসারীর সংখ্যা ১ কোটি ৬০ লাখ, তিনি ২২ মার্চ নিজের পেজে 'ওয়ানএক্সবেট' নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা চালান। এর আগেও তিনি 'বেটউইনার নিউজ'-এর শুভেচ্ছাদূত ছিলেন।

আইনের ফাঁকফোকরেই চলছে এই ব্যবসা
অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও গুগলে বাংলাদেশে অবাধে দেখা যাচ্ছে। অথচ বাংলাদেশে জুয়া আইনগতভাবে নিষিদ্ধ, এবং ১৮৬৭ সালের ‘পাবলিক গ্যাম্বলিং অ্যাক্ট’ অনুযায়ী তা অপরাধ। তবে অনলাইন জুয়াকে ঘিরে স্পষ্ট কোনো আইন বা তদারকি না থাকায় এই খাতটি একটি 'গ্রে এরিয়া'য় পরিণত হয়েছে।

প্রস্তাবিত ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে’ অনলাইন জুয়ার প্রচারণাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে এই আইনে অনলাইন জুয়ার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ২ বছরের কারাদণ্ড বা ২০ লাখ টাকা জরিমানা—or উভয় দণ্ড দেওয়া যেতে পারে।

ডিজিটাল অধিকার বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ডিজিটালি রাইট লিমিটেডের (ডিআরএল) তথ্যমতে, বাংলাদেশে ফেসবুক ও অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বছরে প্রায় ১৫ কোটি টাকার অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়, যদিও প্রকৃত পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে।

তদারকির অভাব, জবাবদিহিতারও সংকট
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইউটিউবারদের বিরুদ্ধে মাঝে মাঝে অভিযান চালালেও জনপ্রিয় তারকাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার নজির নেই। ফলে জবাবদিহিতার অভাবে জুয়ার প্রচারণায় তারকাদের অংশগ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।

গুগল ও মেটার নীতিমালাও উপেক্ষিত
গুগল ও ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার নিজস্ব নীতিমালা অনুসারে বাংলাদেশে জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের অনুমতি নেই। তারপরও বাংলাদেশে লক্ষ্য করে হাজার হাজার বিজ্ঞাপন চলমান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব বিজ্ঞাপনদাতা মেটার শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া ফাঁকি দিয়ে বিজ্ঞাপন চালাচ্ছে।

ডিআরএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিরাজ আহমেদ চৌধুরী বলেন, “যেহেতু আইনে এখনও অস্পষ্টতা রয়েছে, তাই তারকারা দায়মুক্তি পাচ্ছেন। প্রস্তাবিত সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ অনুমোদন পেলে এই চিত্র বদলাতে পারে।”

৫ কোটি মানুষ জড়িয়ে আছেন অনলাইন জুয়ায়
২০২৪ সালের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ সরাসরি অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত। এই বাজারের প্রকৃত মূল্যায়ন না থাকলেও এটি যে দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোয় প্রভাব ফেলছে, তা স্পষ্ট।

১৩২ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ সব খবর
অপরাধ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন