বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া: ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কে নড়েচড়ে বসেছে বড় দেশগুলো

মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫ ৯:২২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সুরক্ষা নীতির অংশ হিসেবে ২ এপ্রিল থেকে নতুন করে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। দিনটিকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দিবস’ হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি। পাল্টা শুল্কের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য চীন হলেও এর প্রভাব পড়েছে ইউরোপ থেকে এশিয়া পর্যন্ত।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন: শক্ত অবস্থান
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতিকে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লেন। তিনি জানান, ইইউ ঐক্যবদ্ধভাবে পদক্ষেপ নেবে এবং প্রয়োজনে পাল্টা শুল্ক আরোপে প্রস্তুত থাকবে। এরই মধ্যে ইইউ মার্কিন ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে পাল্টা শুল্ক কার্যকর করতে যাচ্ছে। ইউরোপে নিত্যপণ্য, ওষুধ ও পরিবহন খাতে শুল্কের প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চীন: পাল্টা আঘাত
যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার জবাবে চীন ৩৪ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি কাঁচামাল রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (WTO) যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দেশটি। চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ১৬টি মার্কিন প্রতিষ্ঠানকে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্য: কৌশলী ও সতর্ক
ব্রিটেনের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার জানিয়েছেন, নতুন শিল্পনীতি গ্রহণ করে অর্থনীতিকে রক্ষা করা হবে। তিনি বাণিজ্যযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি না, বাণিজ্যযুদ্ধই সমস্যার সমাধান।” এদিকে জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার সাময়িকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করেছে।
ভারত: কূটনৈতিক বিচক্ষণতা
বাকি দেশগুলোর তুলনায় ভারত আগেভাগে প্রস্তুতি নেওয়ায় তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। মার্কিন সফরের সময় থেকেই কূটনৈতিকভাবে সক্রিয় ভারত বেশ কিছু মার্কিন পণ্যে শুল্ক হ্রাস করেছে। সম্প্রতি ২৩ বিলিয়ন ডলারের আমদানি পণ্যের ৫৫ শতাংশের ওপর শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। হারলে ডেভিডসনসহ মোটরসাইকেলে শুল্ক হ্রাস ও গুগল, মেটা ও এক্সের ওপর থাকা ৬ শতাংশ কর তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
ভিয়েতনাম: সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টা
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬ শতাংশ শুল্কের জবাবে আলোচনার পথ বেছে নিয়েছে ভিয়েতনাম। দেশটি আমদানি বাড়াতে ও মার্কিন বিনিয়োগে সুবিধা দিতে প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে। ট্রাম্প নিজেও জানিয়েছেন, ভিয়েতনামের সঙ্গে তাঁর ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে এবং দুই দেশের মধ্যে চুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে ইলন মাস্কের স্টারলিংক ভিয়েতনামে কার্যক্রম শুরু করেছে এবং ট্রাম্প অর্গানাইজেশন দেশটিতে বড় বিনিয়োগ করেছে।
১১৬ বার পড়া হয়েছে