সর্বশেষ

অর্থনীতি

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হ্রাসে যেসব প্রস্তাব দেয়ার চিন্তা করছে বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

রবিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৫ ৬:২৭ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ইতিমধ্যে উদ্বৃত্তে রয়েছে, তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কিছু দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন, এবং বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের সরকার রপ্তানি পণ্যের শুল্ক কমানোর জন্য একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর ও চিকিৎসা সামগ্রী আমদানিতে ৫০ শতাংশ শুল্ক ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দেয়া হতে পারে। সেইসঙ্গে, যেসব পণ্যে আগে থেকেই শুল্ক নেই, সেগুলোর ওপর শুল্ক মুক্ত আমদানি অব্যাহত রাখার চিন্তা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ারও প্রস্তাব রয়েছে।

গত শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিডার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত একটি পাঁচ ঘণ্টার বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠানো হবে এবং এর খসড়া প্রণয়নও করা হয়েছে। চিঠিটি পাঠানোর দায়িত্ব নিতে হবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে। পাশাপাশি, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে মার্কিন সরকারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

২ এপ্রিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের সব দেশের পণ্যে ১০ শতাংশ ন্যূনতম শুল্ক আরোপ করেছেন, যা ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। তবে, এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত নয়, বরং আলোচনার সুযোগ রাখে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে, বাংলাদেশ তার পণ্যের শুল্ক কমানোর জন্য নানান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। বিডার সভায় জানা গেছে, শুল্কবাধা অপসারণের পাশাপাশি অশুল্কবাধা সরানোর কাজও শুরু হয়ে গেছে, যেমন যুক্তরাষ্ট্রের কটন বা সুতা আমদানিতে ফিউমিগেশনের শর্ত বাতিল এবং সুতা গুদামজাত করার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি।

এছাড়া, বাংলাদেশ মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দ করার প্রস্তাবও দিচ্ছে, যাতে ফরচুন ৫০ তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে ওয়ালমার্ট, শেভরন, মেটা, টেসলা এবং বোয়িংসহ শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া যেতে পারে।

বিডার সভায় আরও আলোচনা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা যেতে পারে এমন চারটি সম্ভাব্য পণ্যের তালিকা। সেগুলো হলো: ক্যালসিয়াম কার্বনেট, তাজা বা হিমায়িত পশুর মৃতদেহ (মাংসের জন্য), হাড়সহ পশুর মাংসের তাজা বা হিমায়িত টুকরা এবং হাড়বিহীন তাজা ও হিমায়িত পশুর মাংস।

এছাড়া, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে বেশ কিছু মার্কিন পণ্য বিনা শুল্কে আমদানি করছে, যেমন কটন, সয়াবিন, তরলীকৃত বিউটেনাস, সমুদ্রগামী জাহাজ এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস।

যদিও কিছু ব্যবসায়ী মনে করেন, শুল্ক আরোপের ফলে বাংলাদেশের কারখানাগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি হতে পারে, তবে বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা মনে করেন, বাংলাদেশ এই পরিস্থিতি থেকে লাভবান হতে পারে। তবে, বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কম হওয়ায়, এই শুল্ক ভার বহন করতে হলে মজুরি বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, বাংলাদেশের প্রস্তুতি এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল, কারণ ভিয়েতনাম ও ভারত অনেক আগে থেকেই এই ধরনের প্রস্তুতি শুরু করেছিল, কিন্তু বাংলাদেশ যথাযথ প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ পায়নি।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ হাজার ৫১৫টি এইচএস কোডের পণ্য বাংলাদেশে আমদানি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মতে, বাংলাদেশ মার্কিন পণ্যে ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে।

১২৮ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
অর্থনীতি নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন