আশাশুনিতে জিও টিউবের রিংবাঁধ দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে পানি

শনিবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৫ ৬:০৯ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
৫ দিন পর সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের খোলপেটুয়া নদীর ভাঙন কবলিত বেঁড়িবাঁধে জিও টিউব ব্যবহার করে বিকল্প রিংবাঁধ তৈরি করে অবশেষে পানি প্রবাহ বন্ধ করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে এবং সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় শুক্রবার দুপুর থেকে লোকালয়ে পানি প্রবেশ আর বন্ধ হয়ে যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়োজিত ঠিকাদার এবং সেনাবাহিনীর দুটি টিম বিগত তিনদিন ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে জিও টিউবের মধ্যে বালি ভরে বিকল্প রিংবাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চালাচ্ছিল। অবশেষে আজ তারা সফলভাবে রিংবাঁধটি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। এর ফলে শুক্রবার দুপুর থেকে পানি আর লোকালয়ে প্রবাহিত হচ্ছে না, যা স্থানীয়দের জন্য কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো-২) নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন, দিন-রাত পরিশ্রমের মাধ্যমে জিও টিউব ব্যাগের মধ্যে বালি ভরে বিকল্প রিংবাঁধ দিয়ে প্রাথমিকভাবে পানি প্রবাহ বন্ধ করা হয়েছে। এখন আরও কিছু জিও টিউব সেখানে দেয়া হবে, এবং আশা করা হচ্ছে এক সপ্তাহের মধ্যে রিংবাঁধের নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হবে। এরপর মূল বেঁড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ ধাপে ধাপে শুরু হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মার্চ ঈদের দিন সকাল ৯টার দিকে পাউবো বিভাগ-২ এর আওতাধীন ৭/২ পোল্ডারের আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে প্রায় ২০০ ফুট এলাকা জুড়ে বেড়িবাঁধ হঠাৎ ভেঙে খোলপেটুয়া নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এতে স্থানীয় গ্রামবাসীর ঈদের আনন্দ মুহূর্তে কষ্টে পরিণত হয়। হাজার হাজার গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে ভাঙনস্থলে বিকল্প রিংবাঁধ নির্মাণের চেষ্টা করলেও তা জোয়ারের তোড়ে ব্যর্থ হয়।
পানিতে ভেসে যায় প্রায় ৪ হাজার বিঘা মৎস্য ঘের এবং ২১ হেক্টর জমির ফসল, শতাধিক কাঁচাঘর ভেঙে যায়, এবং তিনটি গ্রাম বিদ্যুৎ বিহীন হয়ে পড়ে। পানির কারণে সুপেয় পানির অভাব দেখা দেয় এবং মানুষের রান্নার জিনিসপত্র, হাঁস-মুরগী, এবং গবাদি পশুর খাদ্যও সঙ্কটে পড়ে। বানভাসি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অথবা পাউবো'র বাঁধে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নেয়। বর্তমানে এ এলাকার ১০টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত, এবং স্থানীয়রা মানবেতর জীবনযাপন করছে।
১২৮ বার পড়া হয়েছে