মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ২৭শ' জনের মৃত্যু, খাদ্য-ওষুধের হাহাকার

মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল, ২০২৫ ১১:২১ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ২,৭০০-এরও বেশি। ভূমিকম্পের পর এখনও অনেক ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ায়, সেগুলোর নিচে শত শত মানুষ আটকা পড়ে আছেন।
এই দুর্ঘটনার পর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে সাহায্য কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তারা বলছে, ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে মানুষের জরুরি প্রয়োজনীয় খাদ্য, পানি এবং আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে দেশের অভ্যন্তরীণ গৃহযুদ্ধের কারণে সাহায্য পৌঁছানো বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা প্রধান মিন অং হ্লেইং মঙ্গলবার এক ভাষণে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ২,৭১৯-এ পৌঁছেছে এবং এ সংখ্যা ৩,০০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিনি জানান, ভূমিকম্পে ৪,৫২১ জন আহত হয়েছেন এবং এখনও ৪৪১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। গত শুক্রবার দুপুরে ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প মিয়ানমারকে আঘাত হানে, যা শতাব্দীকাল ধরে দেশটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প ছিল। ভূমিকম্পে বহু পুরোনো গির্জা এবং আধুনিক ভবন ধ্বংস হয়ে যায়।
ভূমিকম্পের ফলে মিয়ানমারের প্রতিবেশী থাইল্যান্ডেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ব্যাংককে একটি আকাশচুম্বী ভবন ধসে পড়লে বহু মানুষ চাপা পড়েন, যাদের মধ্যে কিছু লোককে জীবিত উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে। তবে উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, উদ্ধার কাজ কঠিন হওয়ায়, চাপা পড়া লোকজনকে বাঁচানোর সম্ভাবনা কমে গেছে।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা জানায়, মিয়ানমারের মান্দালয় শহরের একটি প্রাক-বিদ্যালয়ে ভূমিকম্পে ৫০টি শিশু ও দুইজন শিক্ষক প্রাণ হারিয়েছেন। সংস্থাটি আরও জানায়, ভূমিকম্পের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে, বিশেষ করে বিশুদ্ধ পানি এবং স্যানিটেশন সরবরাহের ক্ষেত্রে। তবে জরুরি সেবা শাখার সদস্যরা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়া লোকজনকে চিহ্নিত করে এবং তাদের কাছে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা পৌঁছাতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
আন্তর্জাতিক উদ্ধার কমিটি (আইআরসি) বলেছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি এলাকাগুলোতে, বিশেষ করে মান্দালয়ে, মানুষের জন্য আশ্রয়, খাদ্য, পানি এবং চিকিৎসা সহায়তা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। ভূমিকম্পের পর বেঁচে থাকা মানুষগুলো আতঙ্কের মধ্যে রাস্তায় অথবা খোলা মাঠে রাতে ঘুমাচ্ছেন, কারণ তারা পরাঘাতের (আফটার শক) ভয় পাচ্ছেন।
১২৪ বার পড়া হয়েছে