ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত শোলাকিয়া মাঠ, ৫ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা

শনিবার, ২৯ মার্চ, ২০২৫ ২:২৬ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান এবারের ঈদুল ফিতরের জামাত আয়োজনের জন্য প্রস্তুত। এবার ১৯৮তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মুসল্লিদের নিরাপত্তার জন্য পাঁচ স্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
ঈদের দিন ঈদগাহে আসার পথে প্রতিটি রাস্তায় তল্লাশিচৌকি স্থাপন করা হবে। বিপুলসংখ্যক র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, এবং আনসার সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। সাদাপোশাকে দায়িত্ব পালন করবেন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। সেনাসদস্যদের বিশেষ টহলও থাকবে। সব মিলিয়ে দেড় হাজারেরও বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে মাঠে ছয়টি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। জামাতের সময় চারটি ক্যামেরাযুক্ত ড্রোন মুসল্লিদের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করবে। মুসল্লিদের মাঠে প্রবেশের জন্য তিনটি আর্চওয়ে মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি করবে। জামাতের জন্য মুসল্লিরা শুধু জায়নামাজ ও জরুরি প্রয়োজনে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। ছাতা, ব্যাগ, এবং অন্যান্য ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।
মুসল্লিদের জন্য মাঠটি পরিস্কার করা হয়েছে, সারির দাগ কাটা হয়েছে এবং সীমানাপ্রাচীর ও গাছগুলোকে রং করা হয়েছে। মিম্বরের চারপাশে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। মাঠে স্থায়ী অজুখানা ছাড়াও নতুন অস্থায়ী অজুখানা নির্মাণ করা হয়েছে। সুপেয় পানির জন্য পর্যাপ্ত টিউবওয়েল ও পানির ট্যাংকি স্থাপন করা হয়েছে। শৌচাগারের জন্য অস্থায়ী ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং মুসল্লিদের স্বাগত জানাতে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে।
ঈদের জামাত সকাল ১০টায় শুরু হবে, এবং ঐতিহ্য অনুযায়ী জামাত শুরুর আগে তিনটি ফাঁকা গুলি ছোঁড়া হবে। ইমামতি করবেন মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। ঈদগাহে মুসল্লিদের সুবিধার্থে কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ এবং ভৈরব-কিশোরগঞ্জ রোডে শোলাকিয়া এক্সপ্রেস নামে দুটি বিশেষ ট্রেন চলবে।
শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, এবং র্যাব-১৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি নাইমুল হাসান সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ফৌজিয়া খান জানান, এবারের ঈদ জামাতের জন্য মুসল্লিদের সংখ্যা বিগত বছরের তুলনায় আরও বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
র্যাব-১৪-এর অধিনায়ক জানিয়েছেন, নিরাপত্তার জন্য পোশাকের পাশাপাশি সাদাপোশাকে র্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া, কন্ট্রোল রুম স্থাপন করে সার্ভিলেন্স পরিচালনা করা হবে এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হবে।
ঈদ জামাতকে ঘিরে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এখানে প্রায় ছয় লাখ মুসল্লি উপস্থিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার এবং ড্রোন ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশ সাদাপোশাকে তৎপরতা চালিয়ে থাকবে এবং মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
ঈদ জামাতের পর মুসল্লিরা নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
১২৪ বার পড়া হয়েছে