চাটমোহরের হান্ডিয়ালে জমি জবর দখলে রাখার অভিযোগ

শুক্রবার, ২৮ মার্চ, ২০২৫ ৯:১২ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের এক বিতর্কিত জমি দখল নিয়ে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল করিম এবং তার সহযোগীরা ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে ১১ একর ৬০ শতাংশ জমি অবৈধভাবে দখলে রেখেছেন। ভুক্তভোগীরা আদালতে একতরফা রায় পেয়ে থাকলেও, দখলকারী পক্ষ তা মানছে না এবং জমি ফেরত দিচ্ছে না।
অভিযুক্তদের মধ্যে হান্ডিয়াল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল করিম, তার ভাই আব্দুর রহমান, আব্দুল আজিজ, আব্দুল মজিদ, শামসুল আলম, নজির প্রামাণিক প্রমুখের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তারা দাবি করছেন, তারা ওই জমির বৈধ মালিক। তাদের মতে, এসএ এবং আরএস রেকর্ড তাদের নামে এবং তারা কাগজপত্রসহ জমি অধিকারী। তারা আরও বলেন, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং আদালতে তাদের পক্ষে রায় হবে।
বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠেছে যখন ১৯৫১ সালে জমি নিয়ে একটি খাজনা মামলা হয়, যার পরবর্তী সময়ে ১৯৫৩ সালে জমি সম্পূর্ণরূপে সরকারের নামে চলে আসে। ১৯৫৪ সালে সরকারের তরফে নিলাম করে শশধর হালদারের কাছে জমি বিক্রি করা হয়। কিন্তু পরে, ১৯৫৯ সালে বাদী পক্ষ নিলাম বাতিলের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করেন এবং ১৯৬১ সালে অংশত জমি তাদের পক্ষে ফিরিয়ে আনা হয়। এরপর শশধর হালদার যেহেতু এই জমির ক্রেতা, তার নামেই রেকর্ড হয়। তবে, ১৯৭৬ সালে ডিএস মালিকপক্ষ এই রেকর্ড সংশোধন করতে চাইলেও বিষয়টি আদালতে অনেক বছর ধরে চলতে থাকে।
পরে, ১৯৮২ সালে জমির বিষয়ে ১৪৪ ধারা মামলা এবং ১৯৯৪ সালে আদালতে একাধিক রায়ের পরেও জমি দখল নিয়ে বিবাদ চলছে। এতদিন পরেও জমি দখলকারী পক্ষ দাবি করছে, তাদের দখলে থাকা জমি বৈধ।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে আদালতের রায়ের অপেক্ষায় থেকেও জমি ফেরত পাননি। তারা জানান, প্রতিপক্ষ তাদের জমি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জমির মালিকানা দাবি করছে। এই অভিযোগের প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগীরা প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছেন।
অপরদিকে, অভিযুক্তরা নিজেদের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন যে, আদালত তাদের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং তারা পুরোপুরি আইনি পথে চলছেন। তারা বলেন, যেহেতু জমি বিক্রির কাগজপত্র তাদের কাছে রয়েছে, তাই তাদের দখলে থাকা জমি বৈধ।
এ পরিস্থিতিতে, মামলার একাধিক পদক্ষেপ এবং আইনি বিতর্কের মধ্য দিয়ে জমি দখল এবং মালিকানা নিয়ে শেষ পর্যন্ত কী রায় আসবে, তা সময়ই বলে দেবে।
১২২ বার পড়া হয়েছে