মিয়ানমারে ২০ বছরে সেরকম ভূমিকম্প দেখা যায়নি

শুক্রবার, ২৮ মার্চ, ২০২৫ ১:০১ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
মিয়ানমারে শুক্রবার বড় ভূমিকম্পের ফলে রাজধানী নেপিডোসহ বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের ক্ষতি সাধিত হয়েছে। ভূমিকম্পের কারণে সড়কের ফাটল ও বহু ভবনের ক্ষতি হয়েছে। ভূমিকম্পের সময় লোকজন রাস্তায় বের হয়ে আসে আতঙ্কের মধ্যে।
মিয়ানমার ও এর পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও ভূমিকম্পের অনুভূতি হয়েছে। গত ২০ বছরে এই ধরনের শক্তিশালী ভূমিকম্প এই অঞ্চলে হয়নি বলে ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন। দেশের একাধিক স্থানে পরপর দফায় কম্পন অনুভূত হয়েছে এবং আফটার শক আরও হতে পারে বলে সতর্ক করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, ভূমিকম্পটির মাত্রা ৭.৭ এবং এটি মিয়ানমারের মান্দালয় এলাকায় উৎপন্ন হয়েছে, যার গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর এতে ভূমিকম্পের মাত্রা ৭.৩ উল্লেখ করেছে, যা একটি উল্লেখযোগ্য মাত্রা।
ঢাকা থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ৫৯৭ কিলোমিটার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার উল্লেখ করেন যে, মিয়ানমারের সেন্ট্রাল বেসিনে ‘সাগাইং ফল্ট’ নামে একটি ফল্ট লাইনের কারণে এই ভূকম্প ঘটে। এটি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত।
এর আগে, অল্প সময় পরে ২০ কিলোমিটার দুরে একটি ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে, যা আফটার শক হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, এ অঞ্চলে ভূমিকম্প বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে গত ২০ বছরে এমন শক্তিশালী ভূমিকম্পের নজির নেই।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পৃথিবীর উপরে বিভিন্ন টেকটোনিক প্লেটগুলি একত্রে ছিল, যা কালক্রমে আলাদা হয়েছে এবং সংঘর্ষের সময় শক্তি উৎপন্ন করে। এই শক্তি সিসমিক তরঙ্গের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা ভূমিকম্প সৃষ্টি করে। ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকাগুলি ভূগর্ভস্থ চ্যুতি এবং সংঘর্ষের কারণে উপস্থিত হয়।
বাংলাদেশের ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল সিলেট থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বিস্তৃত এবং হিমালয়ের পাদদেশের এলাকা। এই অঞ্চলগুলোতে ভূমিকম্পের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা বাংলাদেশের উপরেও বিশাল আকারে প্রভাব ফেলছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে ২৮টি ভূমিকম্প ঘটেছিল, ২০২৩ সালে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪১। আগের বছরের তুলনায় গত বছর ৫৪টির সংখ্যা রেকর্ড হয়েছে।
১২২ বার পড়া হয়েছে