রোজার কাজা, কাফফারা আদায় করার নিয়ম

বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫ ৪:৫৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
রোজা ইসলামের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। যদি কেউ কোনো কারণে নির্ধারিত সময়ে রোজা রাখতে না পারে, তাহলে পরবর্তীতে তা কাজা আদায় করতে হয়।
আবার রোজা রেখে যদি কোনো বৈধ কারণ ছাড়া তা ভঙ্গ করা হয়, তবে তা কাজা এবং কাফফারা উভয়ই আদায় করতে হয়। কাজা মানে হলো একদিনের রোজার পরিবর্তে একদিনের রোজা রাখা। আর কাফফারা হলো অতিরিক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, যা রোজা ভঙ্গের ক্ষেত্রে নির্ধারিত হয়।
যদি কোনো ব্যক্তি রোজা রেখে ইচ্ছাকৃতভাবে তা ভঙ্গ করেন, তবে আল্লাহতায়ালা এতে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হন। এই পরিস্থিতিতে কাজা ছাড়াও কাফফারা আদায় করতে হয়। কাফফারার জন্য ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোজা রাখা আবশ্যক। তবে, যদি কারো শারীরিক সামর্থ্য না থাকে, তাহলে ৬০ জন গরিব মানুষকে দুবেলা খাবার খাওয়ানোর বিধান রয়েছে।
কাফফারা আদায়ের তিনটি পদ্ধতি রয়েছে:
১. একজন দাসকে মুক্ত করা (বর্তমানে প্রাসঙ্গিক নয় কারণ দাসপ্রথা বিলুপ্ত হয়েছে)। ২. ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোজা রাখা। কাফফারার রোজার মাঝে কোনো বিরতি হলে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। ৩. ৬০ জন দরিদ্র মানুষকে দুবেলা খাবার খাওয়ানো।
যেসব ব্যক্তি বার্ধক্যজনিত কারণে বা জটিল রোগের জন্য রোজা রাখতে সম্পূর্ণ অক্ষম এবং ভবিষ্যতেও সামর্থ্য ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই, তাদের জন্য ফিদিয়া প্রদানের বিধান রয়েছে। ফিদিয়া হলো প্রতিটি রোজার পরিবর্তে একজন গরিবকে দুবেলা তৃপ্তিসহ খাবার খাওয়ানো বা এর সমমূল্য অর্থ প্রদান করা।
একটি সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, একবার রমজান মাসে এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে জানালেন যে, তিনি রোজা পালন অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে পরামর্শ দিলেন একজন দাস মুক্ত করতে। যখন তিনি জানালেন যে, এ ধরনের সামর্থ্য নেই, তখন তাকে ৬০ দিন ধারাবাহিক রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন। তিনি তাতেও অপারগতা প্রকাশ করলে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে ৬০ জন গরিব মানুষকে খাওয়ানোর পরামর্শ দিলেন। কিন্তু ব্যক্তিটি আর্থিক অক্ষমতার কথা জানালে, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে একটি ঝুড়ি খেজুর প্রদান করেন এবং তা নিজের পরিবারে খাওয়ার অনুমতি দেন। (সহিহ বোখারি: ১৩৩৭; সহিহ মুসলিম: ১১১১)
ফিদিয়া প্রদান সম্পর্কে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
ফিদিয়া একবারে বা ধাপে ধাপে আদায় করা যায়।
একজন গরিবকে একাধিক দিনের ফিদিয়া দেওয়া যেতে পারে, আবার একদিনের ফিদিয়া একাধিক গরিবকেও দেওয়া সম্ভব।
ফিদিয়া গ্রহণকারীর রোজাদার হওয়া বাধ্যতামূলক নয়। নাবালেগ, বৃদ্ধ বা অসুস্থ যেকোনো গরিব ব্যক্তি ফিদিয়া গ্রহণ করতে পারে।
১৩২ বার পড়া হয়েছে